মাদ্রাসার মুহতামিমের পদত্যাগ: দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জনরোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
মাদ্রাসার মুহতামিমের পদত্যাগ: দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জনরোষ

দেবীদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামপুর জামেয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে মাদ্রাসা কার্যালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করার আগে, সকাল থেকেই স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীরা মুহতামিমের পদত্যাগের দাবিতে তার অফিস ঘেরাও করেন।


১৯৮৬ সালে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাফেজ সালমান। এরপর থেকেই তিনি মাদ্রাসায় একক আধিপত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করেন এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রাজনৈতিক নেতা ও এমপিদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে মাদ্রাসার কার্যক্রমকে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। 


২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে জেলে যেতে হয়, তবে পরে তিনি ওই মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হন। এরপর থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেছে, যা বর্তমানে ৬০-৭০ জনে নেমে এসেছে। 


স্থানীয় মেম্বার সফিকুল ইসলাম কালু জানান, মাদ্রাসার সভাপতি রওশন আলী মাস্টার প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু যখন মাদ্রাসার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে, তখন তিনি হিসাব দেখতে চান। সেই সময় সালমান হুজুর হিসাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং এমপির সহযোগিতায় সভাপতি পদ থেকে রওশন আলী মাস্টারকে বাদ দেন।


পদত্যাগী মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান বলেন, “আমি জনতার দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি। তবে আমাকে হিসাব দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে, যাতে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারি।”


এদিকে, দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, “মুহতামিমের পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি, তবে আমি এখনও লিখিত কোন কাগজপত্র পাইনি।” 


জনতার এই পদক্ষেপ মাদ্রাসার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।