কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে নিহত মাদ্রাসাছাত্র তাহসিন এর বাড়িতে শোকের মাতম। শনিবার সকালে তার প্রথম জানাযা কুমিল্লার লাকসাম সড়কের জামিয়া আরাবিয়া কাশেমুল উলুম মাদ্রাসা মাঠে সম্পন্ন করে তার মরদেহ নিজ এলাকায় আনা হলে পুরো এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত তাহসিন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বুড়িরপাড় গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা গোলাম হোসেনের একমাত্র পুত্র। সে কুমিল্লার লাকসাম সড়কের জামিয়া আরাবিয়া কাশেমুল উলুম মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র ছিল। শনিবার বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা নিজ বাড়িতে সম্পন্ন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
কুমিল্লার লাকসাম সড়কের জামিয়া আরাবিয়া কাশেমুল উলুম মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ৪ বন্ধু তাহসিন, নোমান, রিদাত, সাইদুল্লাহ গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিল। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকালে ৪ বন্ধুর মধ্যে ৩ বন্ধু এক সাথে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ‘সুগন্ধ্যা পয়েন্টে’ গোসল করতে নামলে ঢেউয়ের টানে ৩জনই ভেসে যায়। সৈকতে কর্মরত সি সেইফ লাইফ গার্ড কর্মীরা দুই বন্ধুকে উদ্ধার করলেও তাহসিনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় উদ্ধার কর্মীরা তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত তাহসীনের বড় বোন কুমিল্লা লাঙ্গল কোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জান্নাতুল ফেরদৌসী জানান, সমুদ্র সৈকতে নিহত তাহসীন তাদের একমাত্র ছোট ভাই। ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে তার পুরো পরিবার বাকরুদ্ধ ও নির্বাক হয়ে পড়েছেন। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা গোলাম হোসেন।
তাহসীনের মা তাহমিনা আক্তার মিনা মাঝে মাঝে অস্পষ্ট কণ্ঠে শুধু বলছেন, তোমরা আমার তাহসীনকে আইনা দাও, এইভাবে সে চইলা যাইতে পারে না। সন্তানের মৃত্যুর পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার ছোটবোন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী তানভীরুন্নেসা হাসনা সহ পরিবারের সদস্যরা। অকালে তাহসীনকে হারানোর শোক যেন কোনোভাবেই সইতে পারছে না তারা। পরিবার ও প্রতিবেশীদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।