প্রকাশ: ১ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৪৩
শুধু মৃত্যুর সংবাদ শুনলেই কি ‘ইন্নালিল্লাহ’ পড়তে হয়? না, আসলেই তা নয়। ‘ইন্না লিল্লাহ’ পড়ার রয়েছে অনেক কারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত। যদিও অনেকেই মনে করেন, মানুষ মরে গেলে সংবাদ শোনার পড়তে হয়- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’।আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ রাখার, তার প্রিয় বান্দা হওয়ার এবং তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের অন্যতম একটি পরিভাষা এটি। এ সম্পর্কে আয়াতটির আগের ও পরের আলোচনা থেকেই তা সুস্পষ্ট।
নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। তারা সে সব লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৫-১৫৭) এ তিনটি আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, কারা ইন্নালিল্লাহ পড়বেন, কোনো পরিস্থিতিতে পড়বেন, পড়লে কী উপকার হবে? এ সবের বর্ণনা উঠে এসেছে।
إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ
নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।বিপদে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারী এসব বান্দার প্রতি আল্লাহ অফুরন্ত রহমত ও অনুগ্রহ দান করবেন।
সবচেয়ে বড় কথা হলো-
কুরআনুল কারিমে তুলে ধরা এ আয়াতটি মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা ও প্রশান্তির দোয়া বা পরিভাষা। এ অসাধারণ বাণী পাঠ করার মাধ্যমেই বড় বড় দুঃখ-বেদনা ও বিপদ-মুসিবতে ঈমানদার বান্দা প্রশান্তি খুঁজে পায়। আর তা পাঠ করলে মানুষের সব দুঃখ-বেদনা ও বিপদ-মুসিবতের কষ্ট অন্তর থেকে দূরীভূত হয়ে যায়।
একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি
মানুষের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি পরিভাষাই হওয়া উচিত। আর তাহলো এ বাক্যের প্রথম অংশ- ‘ইন্না লিল্লাহ’ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য। কেননা অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার জীবনে বান্দার সব কিছু তার জন্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন এভাবে-(হে রাসুল! আপনি) বলুন, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার আত্মত্যাগ, আমার জীবন, আমার মৃত্যু; সবই বিশ্ব জগতের মালিক আল্লাহ তাআলার জন্য।’আর দ্বিতীয় বাক্যে রয়েছে সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা যে, ‘ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। আর নিশ্চয়ই আমরা তার কাছেই ফিরে যাব।’ এটিই বাস্তব সত্য।
‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। আর আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৩৫)
‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। আর তোমরা কেয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বিনিময় লাভ করবে। তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাত দান করা হবে, সেই প্রকৃত সফলকাম। আর দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)
إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ
‘নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।’যা পড়লে বান্দা যেমন প্রশান্তি ও সান্ত্বনা লাভ করেন, তেমিন মহান আল্লাহর বান্দার এ কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা সীমাহীন খুশি হন। ওই বান্দার ওপর মহান আল্লাহ রাজি-খুমি হয়ে তার উপর দান করেন অফুরন্ত রহমত ও অনুগ্রহ। যা পরকালের কঠিন সময়েও অব্যাহত থাকবে।তাই শুধু মানুষ মারা গেলেই নয়, বরং সুখে ও দুঃখে, আনন্দ-বেদনায়, বিপদ-মুসিবতে অর্থাৎ সব সময় মহান আল্লাহর শুকিরয়া আদায় করে তার অনুগ্রহ ও নৈকট্য লাভে বেশি বেশি ‘ইন্নালিল্লাহ’ পড়া জরুরি।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় বেশি বেশি ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়ার তাওফিক দান করুন। কুরআনে ঘোষিত ফজিলত ও উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।