কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া

Ziaul Hoque
জিয়াউল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২০, ১৫:২৯

শেয়ার করুনঃ
কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ তাকওয়া সমৃদ্ধ ইবাদত। এটি আল্লাহ তাআলার নামে পশু জবেহ করার মাধ্যমে আদায় করতে হয়। অনেকেই কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম ও দোয়া জানেন না। হাদিসে এ সম্পর্কে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনাগোশত খাওয়া হালাল এমন স্থলচর পশু বিশেষ করে কুরবানির জন্য প্রযোজ্য গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট ও দুম্বা ইত্যাদি পশুর কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী এবং উভয় পাশের দু’টি রগ অথবা একটি রগ কাটার মাধ্যমে জবাই বা নহর সম্পন্ন হয়।হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজের কোরবানির পশু তার নিজ হাতে জবাই করেছেন।

নিজের কুরবানির পশু নিজেই জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজের দ্বারা জবাই সম্ভব না হয় তবে অন্যের দ্বারা জবাই করানো। এক্ষেত্রে জবাইয়ের সময় কুরবানি দাতা সামনে থাকা উত্তম।কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া প্রিয় পাঠকের কাছে আজ আমি তুলে ধরলাম। জবাই বা নহরের পদ্ধতি জবাই করার সময় পশু ক্বিবলামুখী করে শোয়ানো। অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা।ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ বলা পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলবশত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া বৈধ।

জবাই করার সময় কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী, এবং উভয় পাশের দুটি রগ অর্থাৎ মোট চারটি রগ কাটা জরুরি। কমপক্ষে তিন যদি তিনটি রগ কটা হয় তবে কুরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দু’টি রগ কাটা হয় তবে কুরবানি দুরস্ত হবে না। (হিদায়া)

জবাই করার সময় ছুরি ভালভাবে ধার দিয়ে নেয়া, যাতে জবাইয়ের সময় পশুর অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। যেমন- এক ছুরি দিয়ে জবাই শুরু করে চামড়া কিছু কাটার পর আর না কাটা অতপর আবার ছুরি পরিবর্তন করে জবাই করা ইত্যাদি।কোনো ব্যক্তি জবাই করার সময় জবাইকারীর ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তবে তাকেও বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা।

কুরবানির পশু জবেহের দোয়া

কুরবানির পশু জবাই করার সময় মুখে (উচ্চ স্বরে) নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত এ নিয়ত করা যে, ‘আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানি আদায় করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম।কুরবানির পশু ক্বিবলার দিকে শোয়ানোর পর এ দোয়া পাঠ করা-উচ্চারণ- ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। কুল ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা আওয়ালুল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ184AJV9F0T856X9BBSG85X.gif
অতঃপর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে কুরবানির পশু জবাই করা।

কুরবানির পশু জবাই করে এ দোয়া পড়া-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়া খালিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাতা ওয়াস সালাম।লক্ষ্যণীয় হলো- যদি কেউ একাকি কুরবানি দেয় এবং নিজে জবাই করে তবে বলবে মিন্নি; আর অন্যের কুরবানির পশু জবাই করার সময় ‘মিন’ বলে যারা কুরবানি আদায় করছে তাদের নাম বলা।মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত নিয়মে কুরবানি আদায় করার তাওফিক দান করুন। সবার কুরবানিকে কবুল করুন, আল্লাহুম্মা আমিন।

 

https://enews71.com/storage/ads/01JR36BQSKCPE69WB8Z3TARXE3.jpg

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

https://enews71.com/storage/ads/01JR3CX28Y9BM01PRE4TXCNDWF.jpg

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

ধৈর্যের শিক্ষা কোরআন ও হাদিসের আলোকে

ধৈর্যের শিক্ষা কোরআন ও হাদিসের আলোকে

ইসলাম মানবজীবনে ধৈর্যকে এমন এক মহান গুণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে যা দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রেই কল্যাণ বয়ে আনে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বহুবার ধৈর্যের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। মানুষের জীবনে বিপদ, পরীক্ষা ও সংকট আসবে, আর এসব মোকাবিলার সর্বোত্তম উপায় হলো ধৈর্য ধারণ করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনেও ধৈর্যের অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তায়েফে অপমানিত

দুর্নীতি ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

দুর্নীতি ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

বর্তমান সমাজে দুর্নীতি, ঘুষ, প্রতারণা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এগুলো মারাত্মক গুনাহ এবং সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। ইসলাম সব ধরনের দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে এবং সৎপথে চলার শিক্ষা দিয়েছে। কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে যারা অন্যায়ের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করে তাদের জন্য পরিণতি ভয়াবহ। কুরআনের সূরা আল-বাকারা’র ১৮৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের তিন প্যাকেজ ঘোষণা, কমল বিমান ভাড়া

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের তিন প্যাকেজ ঘোষণা, কমল বিমান ভাড়া

২০২৬ সালের হজে সরকারি ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণকারী হজযাত্রীদের জন্য তিনটি ভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে বিশেষ প্যাকেজ-১, তুলনামূলক সাশ্রয়ী প্যাকেজ-২ এবং নতুন সংযোজন সাশ্রয়ী প্যাকেজ-৩ অন্তর্ভুক্ত। খরচের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ

হাদিসের আলোকে দয়া ও মানবিকতা

হাদিসের আলোকে দয়া ও মানবিকতা

মানব জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান গুণগুলোর মধ্যে দয়া ও মানবিকতা অন্যতম। ইসলামে দয়া কেবল মানুষের প্রতি নয়, সমস্ত সৃষ্টির প্রতিই প্রদর্শন করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে আমরা দেখতে পাই তিনি দয়া, সহানুভূতি ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হাদিসে এসেছে, আল্লাহ দয়ালু, আর তিনি দয়া প্রদর্শনকারীদের প্রতি দয়া করেন। সহিহ বুখারির এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, যারা পৃথিবীর প্রতি দয়া করবে,

ইসলামে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব !

ইসলামে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব !

ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে অত্যন্ত মর্যাদার আসনে রাখা হয়েছে। কুরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হয়েছিল “ইকরা” শব্দ দিয়ে যার অর্থ পড়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “বলুন, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞান বৃদ্ধি করুন” (সূরা ত্বাহা: ১১৪)। এই আয়াত মুসলমানদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা যে জ্ঞান অর্জন একটি ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ” (ইবনে মাজাহ)। এই হাদিস