প্রকাশ: ১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৬
যুক্তরাষ্ট্রে বাজেট সংক্রান্ত রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত বিল অনুমোদন না হওয়ায় বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রমে শাটডাউন শুরু হয়েছে। নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং সিনেটে নতুন বাজেট বিল নিয়ে একমত না হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সিনেটের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যরা শেষ মুহূর্তে সাময়িক তহবিল পাস করানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় ভোটের অভাবে তা অনুমোদিত হয়নি। ৬০ ভোটের প্রয়োজন হলেও বিলটি ৪৭-৫৩ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। হোয়াইট হাউজ অভিযোগ করেছে, ডেমোক্র্যাটরা সাময়িক তহবিল অনুমোদন করেননি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শাটডাউন দীর্ঘ ও জটিল রাজনৈতিক সংঘাতের সূচনা হতে পারে। এর ফলে হাজার হাজার ফেডারেল কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে থাকবেন। সরকারি সংস্থাগুলি সতর্ক করে জানিয়েছে, এটি ১৯৮১ সালের পর ১৫তম শাটডাউন। শাটডাউনের প্রভাব পড়বে সেপ্টেম্বরের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসংস্থান প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা ও প্রোগ্রামে।
ফেডারেল কর্মীদের বেতন আটকে যাবে, বিমান পরিবহন ধীরগতি পাবে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্থগিত থাকবে, এবং সেনাদের বেতন বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হতে পারে। প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার সরকারি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে থাকবেন।
সরকারি তহবিল নিয়ে হোয়াইট হাউজে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এড়ানো যায়নি। ডেমোক্র্যাটরা রিপাবলিকানদের দায়ী করছেন, আবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই অগ্রগতি বিঘ্নিত হওয়ার জন্য ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছেন। ট্রাম্প শাটডাউনের মাধ্যমে সরকারি কর্মসূচি ও কর্মী ছাঁটাইয়ের পথ খুলে দিতে চাইছেন।
অস্থিরতার প্রভাব মার্কিন শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগে স্পষ্ট। দরপতন, সোনার দাম বৃদ্ধি এবং এশিয়ার শেয়ারবাজারে ওঠানামা দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মূল তথ্য প্রকাশের বিলম্ব এবং চাকরি হারানোর প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এবারের শাটডাউন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দীর্ঘ হতে পারে। হোয়াইট হাউজ ও ট্রাম্প প্রশাসন ভবিষ্যতে সরকারি কর্মসূচি ও কর্মী ছাঁটাই নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলগুলো আরও আলোচনায় জড়িত হচ্ছে।
সংবাদটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অচলাবস্থা, অর্থনীতি এবং ফেডারেল কর্মীদের ওপর শাটডাউনের প্রভাব তুলে ধরছে।