ইংরেজি আধুনিক সাহিত্যের জনক জজ বার্নার্ড শ একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, "যদি মহানবী (সা:)-এর মত কোনো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তি আধুনিক বিশ্বের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারতেন তবে তিনি বর্তমান জগতের সমস্যাবলীর সকল সমাধান টেনে দিতেন। যিনি মানুষের বহু আশা-আকাঙ্ক্ষা আর সুখ-শান্তি এনে দিতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম হতেন।"
(I believe that if a man like him were to assume the dictatorship of the modern world he would succeed in solving its problems in a way that would bring it the much-needed peace and happiness.)
করোনা ভাইরাসের এই মহামারীর সময়ে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত কিছু পরিভাষা ও বিধি-বিধান এর সাথে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর ধ্যান-ধারণার কী অপূর্ব সামঞ্জস্য ছিল তার কিছু উদাহরণ আমি নিম্নে তুলে ধরছি।
এটি সাম্প্রতিক সময়ে একটি বহুল আলোচিত পরিভাষা। লকডাউন শব্দের শাব্দিক অর্থ অবরুদ্ধতা বা তালাবদ্ধ করে দেয়া। শব্দটির ব্যাখ্যায় ক্যামব্রিজ ডিকশনারিতে বলা হয়েছে, A situation in which people are not allowed to enter or leave a building or area freely because of an emergency. অর্থাৎ কোনো জরুরি পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষকে কোনো জায়গা থেকে বের হতে না দেয়া কিংবা ওই জায়গায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়াই হলো লকডাউন। এছাড়া অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে বলা হয়েছে, An official order to control the movement of people or vehicles because of a dangerous situation. অর্থাৎ, জরুরি সুরক্ষার প্রয়োজনে কোনো নিদিষ্ট এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণ করাই লকডাউন।
লকডাউন সম্পর্কে যা বলেছেন মুহাম্মদ (দ.):
পৃথিবীবাসীর কাছে লকডাউন সম্পর্কে সর্বপ্রথম নির্দেশনা প্রদান করেছেন বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (দ.)। তিনি বলেছেন,
১) “যদি তোমরা শুনতে পাও যে, কোনো জনপদে প্লেগ বা অনুরূপ মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে তবে তোমরা তথায় গমন করবে না। আর যদি তোমরা যে জনপদে অবস্থান করছ তথায় তার প্রাদুর্ভাব ঘটে তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না।“ (বুখারি, আস-সহীহ ৫/২১৬৩; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৭৩৮, ১৭৩৯)
২) “কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না।“ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১০৬৫)
৩) মহামারি অঞ্চলে প্রবেশ করা কিংবা মৃত্যুর ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। (আউনুল মাবুদ, ৮ম খণ্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা।)
আইসোলেশন অর্থ বিচ্ছিন্ন থাকা। বাংলাদেশের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কারো মধ্যে যখন জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়বে বা ধরা না পড়লেও তার মধ্যে উপসর্গ থাকবে তখন তাকে আলাদা করে যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে তাকে বলা হয় আইসোলেশন। (সূত্র- BBC বাংলা)
আইসোলেশন সম্পর্কে ইসলাম যা বলে:
১) মহানবী (দ.) বলেছেন, “অসুস্থকে সুস্থের কাছে নেওয়া ঠিক হবে না।“ বুখারি শরীফের ৫৭৭১ নম্বর হাদিসে রাসুল (দ.) বলেছেন, “রোগাক্রান্ত উটকে যেন সুস্থ উটের সাথে একত্রে পানি পানের জায়গায় না আনা হয়।“
২) হিজরি ১৮ সালে মুসলিমরা বাইজেন্টাইন রোমানদের সাথে লড়াই করছিল। উমর ইবন আল-খাত্তাব (রা.) তখন আমিরুল মুমিনিন, খিলাফায়ে রাশেদিনের দ্বিতীয় খলিফা। সেই সময় ইমাউস প্লেগ নামে রোগের প্রাদুর্ভাব হয় সিরিয়ায়। প্রায় ২৫ হাজার মুসলিম এতে শহিদ হয়েছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে মুয়াজ ইবন জাবাল (রা.), আবু উবাদাহ আমির ইবন আল-জাররাহ’র (রা.) মতো বিখ্যাত সাহাবিরাও ছিলেন। অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ সাহাবির ইন্তেকালের পর প্লেগ উপদ্রুত জনপদে মুসলিমদের সেনাপ্রধান আমর ইবনুল আস (রা.) সবাইকে ডেকে বললেন, '‘মনে রাখবে, প্লেগ আগুনের মতো। সবাই একসঙ্গে থাকলে তা সবাইকে ধ্বংস করে দেবে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলে সবাইকে ধ্বংস করতে পারবে না।'’ তিনি এ মহামারি মোকাবেলায় সবাইকে ছোট ছোট দলে ভাগ করে নির্দেশ দেন, “পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পাহাড়ে চলে যাও।“ তিনি সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং জারি করেন। যাতে কেউ কারও সঙ্গে মিশতে পারবে না। এভাবে আলাদা আলাদা দলে বিভক্ত হয়ে তারা দীর্ঘ দিন পাহাড়ে আইসোলেশনে থাকেন এবং সবাই মহামারী থেকে মুক্তি পেলেন। (ইবনে হাজর আসকালানী (র.) মহামারি সম্পর্কে তার অনবদ্য ‘বজলুল মাউন ফি ফাজলিত তাউন’ গ্রন্থে এ ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।)
হোম কোয়ারেন্টিন (Quarantine):
যেসব ব্যক্তিকে আপাত দৃষ্টিতে সুস্থ মনে হয়, কিন্তু সে সুস্থ হতে আবার নাও পারে, তার মধ্যে হয়তো জীবাণু আছে কিন্তু তার মধ্যে কোন ধরণের উপসর্গ দেখা দেয়নি- এমন ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। অর্থাৎ যারা এখনো অসুস্থ না এবং যাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়নি, তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায়, আইসোলেশন হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য আর কোয়ারেন্টিন হচ্ছে সুস্থ বা আপাত সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য। (BBC বাংলা)
ইসলাম ধর্মমতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলে শহীদের সওয়াব:
মহানবী (দ.) বলেন, “যে কোনো ব্যক্তি মহামারীর সময় ধৈর্যসহকারে নিজেকে সওয়াবের আশায় ঘরে রুদ্ধ রাখবে এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আল্লাহ তার ভাগ্যে যা লিখেছেন এর বাইরে কিছুই ঘটবে না, সে শহীদের মর্যাদা ও বিনিময় লাভ করবে।'' (বুখারি, হাদিস: ৩৪৭৪ ও মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৬১৩৯)।
বুখারী শরীফের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার ফতহুল বারী শরহে বুখারী এর রচয়িতা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি এই হাদীসের ব্যাখ্যায় লেখেন, ধৈর্য সহকারে, সওয়াবের আশায় ও আল্লাহর উপর ভরসা- এই তিনটি বিষয় ধারণ করে যে ব্যক্তি মহামারীর সময় ঘরে থাকবে, তিনি শহীদের মর্যাদা পাবেন। মহামারীতে তিনি মারা যান অথবা না-ই মারা যান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে:
1. Cover your mouth and nose every time you cough or sneeze. Use a disposable tissue to cover your mouth or nose if possible.
2. If a cough or sneeze sneaks up on you and no tissue is available, cough or sneeze into your upper sleeve. This prevents your hands becoming contaminated with cold or flu viruses.
অর্থাৎ, হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে নেওয়া কিংবা কিছুই না থাকলে কনুই ভাঁজ করে হাতের আস্তিন দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে।
হাঁচি-কাশি ও হাই তোলার ব্যাপারে মহানবী (দ.) যে নির্দেশনা দিয়েছেন:
১) হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- “যখন রাসূলুল্লাহর (দ.) হাঁচি আসতো তখন তিনি নিজের হাত বা কাপড় দ্বারা মুখ ডেকে ফেলতেন এবং হাঁচির শব্দকে নিচু রাখতেন।“ (তিরমিযী ও আবু দাউদ)
২) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, “যখন তোমাদের কারো হাই আসে, তখন সে যেন নিজের হাত দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখে। নতুবা শয়তান তার মুখের ভিতরে চলে যায়। (মুসলিম, হাদিস নং-২৯৯৫)
অর্থাৎ হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে, যেনো শ্লেষ্মা অন্য কোনো লোকের গায়ে-মুখে না পড়ে। আর কোনো বৈঠকে বসা অবস্থায় হাই আসলে তখন তাকে যেকোনো উপায়ে রোধ করতে চেষ্টা করবে।
হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলি এড়িয়ে চলা:
হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলির মাধ্যমে সংক্রমণের ভয় থাকে। রাসুলুল্লাহ (দ.) সাকিফের প্রতিনিধিদলের মধ্যকার কুষ্ঠ রোগীকে হাতে হাতে বাইয়াত না দিয়ে লোক মারফত বলে পাঠান, ‘তুমি ফিরে যাও। আমি তোমার বাইআত নিয়ে নিয়েছি।‘ (মুসলিম, হাদিস : ২২৩১),
রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘ধ্বংসাত্মক কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির সংস্রবে যাবে না।‘
মহামারীতে মৃত ব্যক্তি শহীদ:
মহামারিতে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না। রাসুল (দ.) এর ভাষায় মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহীদ।
১) আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (দ.) বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ- মহামারিতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহীদ হলো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮২৯)
২) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, মহামারিতে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য শাহাদাত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৩০)
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহর রাসুল (দ.) পাঁচটি অমূল্য সম্পদ হারানোর পূর্বে সেগুলোর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। এর অন্যতম হচ্ছে স্বাস্থ্য।
১) নবীজি (দ.) বলেন, ‘পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিস আসার আগে গনিমতের অমূল্য সম্পদ হিসেবে মূল্যায়ন করো। জীবনকে মৃত্যু আসার আগে, সুস্থতাকে অসুস্থ হওয়ার আগে, অবসর সময়কে ব্যস্ততা আসার আগে, যৌবনকে বার্ধক্য আসার আগে এবং সচ্ছলতাকে দারিদ্র্য আসার আগে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ৮/১২৭; সহিহুল জামে, হাদিস : ১০৭৭)
২) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তোমার ওপর তোমার শরীরেরও অধিকার রয়েছে।“ (বুখারি, হাদিস : ১৯৬৮)
হাত ধোঁয়া এবং সার্বিক পরিচ্ছন্ন থাকা:
১) আবু মালেক আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ২২৩)
২) সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (রা.) থেকে। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্রকে পছন্দ করেন। আল্লাহ পরিচ্ছন্ন। তিনি পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন। আল্লাহ মহৎ, তিনি মহত্ব পছন্দ করেন, আল্লাহ বদান্য, তিনি বদান্যতা পছন্দ করেন। অতএব তোমরা তোমাদের (ঘরের) উঠোনগুলো পরিচ্ছন্ন রাখবে। (তিরমিজি, হাদিস নং: ২৭৯৯)
৩) রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যদি রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে তবে সে হাতে দুই বা তিনবার পানি ঢেলে তা পাত্রে ঢুকাবে, কারণ সে জানে না তার হাত কোন কোন স্থানে রাত কাটিয়েছে। (তিরমিযি, আবু দাউদ, নাসাঈ)
উট ছেড়ে দিয়ে তাওয়াক্বুল করতে বারণ করা হয়েছে:
রাসূল (সা.) উট বেঁধে তাওয়াক্বুল করতে বলেছেন, উট ছেড়ে দিয়ে নয়। হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি উট বেঁধে রেখে আল্লাহর উপর ভরসা করব, না বন্ধনমুক্ত রেখে? তিনি বললেন, উট বেঁধে নাও, অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা কর। (তিরমিযি)
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক ধারণা:
সারাবিশ্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও আমার বা আমাদের কিছু হবে না— এটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক ধারণা। ইসলাম যা শেখায় না, তার মধ্যে আবেগ থাকলেও কল্যাণ নেই। বার্নার্ড শ বলেছিলেন, "Be aware of false knowledge it is more dangerous than ignorance." অর্থাৎ ভ্রান্ত জ্ঞান অজ্ঞতার চেয়ে বিপদজনক। এসব ধারণা ঈমানের শক্তির প্রমাণ দেয় না, বরং নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয়। ওহুদের যুদ্ধে রাসুলাল্লাহ (সা.) নিজে আহত হয়েছিলেন, একই যুদ্ধে তার চাচা হামজাহ (রা.) শহিদ হয়েছেন। জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়া আবু উবায়দাহ আজ-জাররাহ (রা.) প্লেগে মৃত্যুবরণ করেছেন। একই প্লেগে মৃত্যুবরণ করেছেন রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর অত্যন্ত প্রিয় সাহাবি মুআজ ইবন জাবাল (রা.)।
মানুষের আধ্যাত্মিক ও শারীরিক বিপদ হতে পারে— এমন কাজ করা যাবে না:
মানুষের আধ্যাত্মিক ও শারীরিক বিপদ হয়— এমন কাজ করা মুসলিমের জন্য হারাম, এমনকি সেটা ইসলামের নামে করা হলেও।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একদিন বৃষ্টিপাত হচ্ছিল প্রচুর, মুহাম্মদ (সা.) তার মুয়াজ্জিনকে বললেন, যখন তুমি ‘আশহাদু আন্নাহ মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বল, তারপর তুমি বলবে, ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ বা তোমরা ঘরে নামাজ আদায় করো। এটা বোখারী ও মুসলিমের হাদিস।
তিনি বলেন, “বৃষ্টির দিনে যেন মসজিদে আসতে বারণ করা বা অনুৎসাহিত করা হয়, কারণ যিনি বৃষ্টি ভিজবেন, তিনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।“
অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়লে কী হয়:
মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, “যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।“ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪০১৯)
পরিশেষে বলতে চাই, বিশ্বে মুসলমান দুই ধরণের।
১) Nominal Muslim (নামে মাত্র মুসলমান)
২) Practicing Muslim (প্রকৃত মুসলমান)
এই পবিত্র রমজানে মহান রবের দরবারে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে প্র্যাকটিসিং মুসলমান হিসেবে কবুল করেন এবং পৃথিবীবাসীকে এই দুর্বিষহ মহামারী থেকে আশু রক্ষা করেন। আমিন।