প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪০
ডিজিটাল যুগে মানুষ প্রতিদিনই ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া ও স্মার্টফোনের মাধ্যমে তথ্য গ্রহণ করছে। কিন্তু এ প্রযুক্তি যেমন মানুষের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ওপর চাপও বাড়িয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রযুক্তির ব্যবহার হালাল ও হারামের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ যা হালাল তা গ্রহণ করতে হবে, আর যা হারাম তা পরিহার করতে হবে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি সত্যকে গ্রহণ কর এবং অসত্য থেকে দূরে থাকো’ (সুরা যুমার, আয়াত ১৭)। এই আয়াত মুসলমানদের তথ্যের ক্ষেত্রে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে গীবত, অপবাদ ও অশ্লীলতা থেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ এসব ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই মুসলমানদের উচিত প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক থাকা। গীবত, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ইসলামে গুরুতর গুনাহ।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের সঠিক ব্যবহার করা ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ। সময় নষ্ট করা, অযথা বিনোদনে নিমগ্ন হওয়া বা অশালীন কন্টেন্ট দেখা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুই নিয়ামত আছে যেগুলোতে মানুষ প্রতারিত হয়: সুস্থতা ও অবসর সময়’ (বুখারি)। এই হাদিস মুসলমানদের শেখায় যে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হবে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রাইভেসি বা গোপনীয়তাও ইসলামের নৈতিকতার অংশ। কারও অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ছড়ানো ইসলামে নিষিদ্ধ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা একে অপরের গোপন ব্যাপার অনুসন্ধান করো না’ (সুরা হুজরাত, আয়াত ১২)।
মুসলমানদের উচিত নিজেদের সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই ডিজিটাল নৈতিকতা শেখানো। যেন তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও ইসলামের মূলনীতি থেকে বিচ্যুত না হয়। অভিভাবকদের ভূমিকা এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে মুসলমানদের মনে রাখতে হবে, প্রতিটি কাজের হিসাব আল্লাহর কাছে দিতে হবে। তাই প্রতিটি ক্লিক, প্রতিটি পোস্ট এবং প্রতিটি মন্তব্য যেন ইসলামের নৈতিক মানদণ্ড অনুযায়ী হয়।
ডিজিটাল যুগে ইসলামী শিক্ষার আলোয় চললে শুধু ব্যক্তিগত জীবনই সঠিক পথে থাকবে না, বরং একটি নৈতিক সমাজ গড়ে উঠবে। মুসলমানদের দায়িত্ব এই নতুন দুনিয়ায়ও ইসলামের আদর্শ বজায় রাখা।