প্রকাশ: ৬ মে ২০২৫, ১০:৪৫
সৌদি আরব সরকার এবছরের হজ মৌসুমকে ঘিরে নিয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি, পবিত্র হজ পালনকারীদের জন্য নিরাপত্তা ও সেবার ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পবিত্র মক্কা ও মদিনা নগরীতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়। হজযাত্রীদের আগমন শুরু হওয়ায় বিমানবন্দর ও বন্দরে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্য, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বাড়ানো হয়েছে জনবল।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবারের হজ মৌসুমে প্রায় ৩২ হাজার চিকিৎসা কর্মী ও ৮ হাজার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়। পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে বাড়ানো হয়েছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, দিনে কয়েকবার জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে সকল স্থান।
অপরদিকে হজযাত্রীদের সচেতনতায় বিভিন্ন ভাষায় নির্দেশনা প্রচার করা হচ্ছে টিভি স্ক্রিন, মাইকে ঘোষণা ও লিফলেটের মাধ্যমে। ইসলামিক শিক্ষা ও হজ বিষয়ক ফতোয়ার জন্য আলাদা হেল্পডেস্কও খোলা হয়েছে। নারী হজযাত্রীদের জন্য আলাদা সুবিধার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এবছর, যাতে তারা নির্বিঘ্নে ইবাদত করতে পারেন।
এছাড়া মিনায় তাঁবু স্থাপন, মক্কা-মিনা-মুজদালিফা-আরাফাত যাতায়াতের জন্য বাস ও ট্রেন সার্ভিস প্রস্তুত করা হয়েছে আগেভাগেই। হজযাত্রীদের খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছে একাধিক সংস্থা, যার মধ্যে রয়েছে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়, রেড ক্রিসেন্ট এবং স্বেচ্ছাসেবক দল।
বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে পরিবেশ সচেতনতায়। হজযাত্রীদের প্লাস্টিক ব্যবহার সীমিত করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। হজ চলাকালীন বিভিন্ন কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের ভিড় ও চলাচল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ।
সৌদি হজ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবছর ২০ লক্ষাধিক মুসলিম বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হজে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং ইবাদত নির্বিঘ্ন রাখতে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম হজ পালনে মুসলমানদের জন্য একটি নিরাপদ ও প্রশান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েছে সৌদি আরব।