প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:৩৩
গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহরে আবারও হামলা চালানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে শহরের পৌর পার্ক এলাকা ত্যাগ করার সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে এনসিপি। বহরে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং হামলায় নেতৃত্বাধীন নেতারা অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়েন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে, তবে হামলার তীব্রতা কমেনি।
এ সময় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তারাও হামলার মুখে পড়ে এবং পাল্টা ব্যবস্থা নিতে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেও এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। একপর্যায়ে নেতাদের বহর ঘুরিয়ে গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়।
ঘটনার পরপরই এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সমাবেশ শেষে ফেরার সময় চারপাশ থেকে হামলার মুখে পড়ি। প্রশাসন বলেছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু বাস্তবে পুলিশ এবং আর্মি ছিল সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। তিনি অভিযোগ করেন, সারা দেশ থেকে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা গোপালগঞ্জে জড়ো হয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনার পর এনসিপি নেতা সার্জিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বার্তা দেন যেখানে তিনি লেখেন, “আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।” তিনি বলেন, “খুনি হাসিনার দালালরা আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে। গোপালগঞ্জবাসী এবং দেশের বিবেকবান ছাত্র জনতা জেগে উঠুন।”
পুলিশ ও র্যাব একাধিকবার চেষ্টা করেও এনসিপি নেতাদের শহর থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় তাদের আবার শহরে ফিরিয়ে এনে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রাখা হয়। গোপালগঞ্জ শহরে সেনা মোতায়েন, পুলিশি তৎপরতা এবং টহল সত্ত্বেও শহরজুড়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এনসিপির নেতারা দাবি করেছেন, এই হামলা গণআন্দোলনকে দমিয়ে রাখার কৌশল। তারা জানিয়েছেন, এই হামলা তাদের আন্দোলনকে দমাতে পারবে না, বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।