প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১৮:১১
আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণার পর এবার তাদের অনলাইন উপস্থিতিও থামাতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। দলের নেতাকর্মীরা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাইবার জগতে নজরদারি শুরু করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরোপুরি কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে দলটির সবধরনের প্রচার, সভা, সমাবেশ ও অনলাইন কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং যেকোনো অপতৎপরতা চিহ্নিত করতে সাইবার প্যাট্রলিং চলছে। সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট টেক কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেবে। পাশাপাশি ওয়েবসাইটগুলো ব্লক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিগতভাবে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের অনলাইন উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সহজ নয়। কারণ ভিপিএন, টর ব্রাউজার ও প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে ব্লকড প্ল্যাটফর্মে সহজেই প্রবেশ করা যায়।
আইসিটি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা জানান, সাইবার স্পেসের অনেক অংশ এনক্রিপটেড এবং বিদেশে হোস্ট করা, যা সরকারের নজরদারির বাইরে। তাই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হলে শুধু আইনগত নয়, প্রযুক্তিগত দক্ষতাও জরুরি।
সরকারের প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টারা বলছেন, বিটিআরসির মাধ্যমে ওয়েবসাইট ব্লক করা হবে এবং টেক ফার্মগুলোকে সামাজিক মাধ্যম বন্ধের অনুরোধ জানানো হবে। তবে বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মাহতাব উদ্দিন মনে করেন, দেশীয় কনটেন্টের উপর সরকার প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও বিদেশি সার্ভারে থাকা কনটেন্ট বা অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এ কারণে সাইবার স্পেসে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও তা আংশিকই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।