ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ও মেয়ে বুশরা সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্ব পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে শাহীন সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও অর্থ পাচার, দুর্নীতি এবং ঘুসের অভিযোগে তা প্রত্যাখ্যান করে মাল্টা কর্তৃপক্ষ।
দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাহীন সিদ্দিকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রচ্ছায়ার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জমি দখল এবং সেগুলো বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিল। এ কারণে মাল্টার নাগরিকত্ব প্রদানের প্রক্রিয়া পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস তার আবেদন খারিজ করে। ২০১৫ সালে মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের সঙ্গে যৌথভাবে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও সেবারও তা নাকচ হয়।
বুশরা সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে শিক্ষার্থী ভিসায় অবস্থানকালে ২০১৮ সালে ১৯ লাখ পাউন্ড দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন। তার বাসস্থান এবং তারিক সিদ্দিকের সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাল্টার কর্তৃপক্ষ শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক স্টেটমেন্টে উল্লেখিত অর্থের উৎস নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে।
মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদনের নথিপত্র থেকে জানা যায়, শাহীন সিদ্দিক ২০১৫ সালে দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেডকে নিজের প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করলেও তার প্রকৃত সম্পদের উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি। এ কারণে তার আবেদন খারিজ হয়।
গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তারিক সিদ্দিক ও শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ। গুম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ থেকে বৈধ উপায়ে এক বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে নেওয়া যায় না। অথচ শাহীন সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিদেশে অবৈধ অর্থ পাচারের প্রমাণ রয়েছে।
মাল্টার নাগরিকত্ব পেতে ব্যর্থ হওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে তারিক সিদ্দিক ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।