গরুর দুধের চেয়ে মূত্রের দাম বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ৪ঠা জানুয়ারী ২০২০ ০১:০৬ অপরাহ্ন
গরুর দুধের চেয়ে মূত্রের দাম বেশি

গরুর দুধ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। দেহের নানান রোগ থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে দুধ। তবে কখনো শুনেছেন কি, গরুর দুধের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয় গোমূত্র? নিশ্চয় অবাক হয়েছেন? হ্যাঁ, শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বাস্তবে এমনটি ঘটে চলেছে ভারতে। ভারতের কলকাতায় সম্প্রতি গরুর দুধের দামের থেকে গরুর মূত্রের দাম বেশি। গত তিন চার বছরে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে গোমূত্রের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

দেশটির ব্যবসায়ী মহল জানায়, গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের পথ অনুসরণ করে পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় গত তিন-চার বছরে তুঙ্গে উঠেছে গোমূত্রের বিক্রি। কলকাতা শহরে গোমূত্রের চাহিদা বাড়ায় অন্য রাজ্যের গোশালা থেকে গোমূত্র এনে ব্যবসা করছেন একাধিক এজেন্ট। 

এসব এজেন্টদের মধ্যে একজন জানান, গত কয়েক বছরে এখানে গোমূত্রের চাহিদা পাঁচ গুণ বেড়েছে। মাসে প্রায় ১০ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় পশ্চিমবঙ্গে।এ রাজ্যে তেমন উৎপাদন নেই। তাই আমরা নাগপুর থেকে আনিয়ে দেই। তিনি আরো জানান, এক লিটার গোমূত্রের দাম ৪১০ টাকা। আর ওখান থেকে আনা দুধ আমরা বিক্রি করি ১৭৬ টাকা লিটারে। বর্তমানে কলকাতায় গরুর দুধ লিটার প্রতি ৪১ থেকে ৫১ টাকার মধ্যে মেলে। তার প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গোমূত্র।

ভারতের নাগপুরের অন্যতম একটি ‘গো বিজ্ঞান অনুসন্ধান কেন্দ্র’ যেখান থেকে বিভিন্ন এজেন্ট কলকাতায় গোমূত্র ও দুধ আনান, সেটি আরএসএস পোষিত সংস্থা নামে পরিচিত। পুরো ভারতে তাদের ৫০০-র বেশি গোশালা রয়েছে। সংস্থাটির চিফ কোঅর্ডিনেটর বলেন, পশ্চিমবঙ্গেও আমরা ১৬টি জায়গায় গোশালা শুরু করেছি। সেখান থেকেও কিছুদিনের মধ্যে ডিস্টিল্ড গোমূত্র মিলবে।

এছাড়া ক্যালকাটা পিঁজরাপোল সোসাইটি নামে একটি সংস্থার পাঁচটি গোশালা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সেখানকার কো-অর্ডিনেটর সর্বেশ্বর শর্মা বলেন, প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে গোমূত্রের বিক্রি বাড়ছে। কলকাতায় মাসে প্রায় ৩ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয়। 

ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে গোমূত্র থেরাপি ক্লিনিক চালাচ্ছেন এমন একজন ব্যবসায়ী সংবাদমাধ্যমে জানান, কলকাতাতেও আমাদের অনেক রোগী আছে। অনেক নেতারা ওষুধ নিয়ে যান। মেডিকেটেড গোমূত্র ২১৩ টাকা করে লিটার বিক্রি করি। মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার লিটার বিক্রি হয়।

দেশটির ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ফার্মাকোলজির শিক্ষক জানান, পুরো ব্যাপারটি ভণ্ডামি। গাছগাছালি থেকে রাসায়নিক বের করে ওষুধ হতে পারে। তার ফার্মাকো কাইনেটিক্স ও ডায়নামিক্স রয়েছে। গোমূত্রের এমন কিছুই নেই।

ইনিউজ ৭১/এম.আর