প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ২২:৭
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভারত সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি এই সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক ও হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, এ সিদ্ধান্তের কোনও নৈতিক বা কূটনৈতিক ভিত্তি নেই। প্রিয়াঙ্কার মতে, সত্যিকারের নেতৃত্বের জন্য সাহস দরকার, যা বর্তমান সরকারের মধ্যে অনুপস্থিত। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত এখন শুধু নীরব সমর্থনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইরানে হামলা এবং শীর্ষ নেতাদের হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় পরোক্ষভাবে উৎসাহ প্রদান করছে।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনেরও অবমাননা। তিনি উল্লেখ করেন, গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভারত কীভাবে তার সংবিধানগত মূল্যবোধ এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিসর্জন দিতে পারে? তার মতে, এটি ভারতের বিরোধী উপনিবেশবাদী ঐতিহ্য থেকে এক করুণ পশ্চাদপসরণ।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে ভারত বারবার মানবতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, এবং এখন এই বিভক্ত বিশ্বে ভারতের উচিত ন্যায় ও শান্তির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো। তিনি বলেন, ভারতের ইতিহাস অহিংসা ও সত্যের পক্ষে অবস্থানের, তাই এই সময়ে নীরবতা নয়, বরং স্পষ্ট অবস্থান প্রয়োজন। তিনি আরো জানান, একটি জাতিকে অবরুদ্ধ করে ধ্বংস করা হচ্ছে, যেখানে শিশুদেরও বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থান অত্যন্ত দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, শুক্রবারের ওই প্রস্তাবে ১৪৯টি দেশ সমর্থন জানালেও ভারতসহ ১৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে যেমন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, তেমনি সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা চলছে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অতীতেও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন, এবং সংসদ অধিবেশনে লেখা ব্যাগ বহন করে আলোচনায় এসেছিলেন।
এই প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের নীতিগত অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিরোধ আরও তীব্র হবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ভারতের অতীত মানবিক অবস্থানের সঙ্গে বর্তমান নিরপেক্ষতা অনেককেই বিস্মিত করেছে।