জঙ্গিদের টার্গেট ছিল পুলিশের ওপর হামলা করা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৯ই আগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
জঙ্গিদের টার্গেট ছিল পুলিশের ওপর হামলা করা

নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ জঙ্গিদের টার্গেট ছিল সুবিধাজনক সময়ে পুলিশের ওপর হামলা করা। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা ‘এক্সক্লুসিভ ডিভাইস বা আইডি’ তৈরির যন্ত্রাংশও সংগ্রহ করেছিল। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) দীর্ঘ নজরদারি করে এসব তথ্য নিশ্চিত হয়ে তাদের গ্রেফতার করে।শুক্রবার (৯ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম।তিনি বলেন, ‘রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ গ্রুপের পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছি। তারা সবাই শিক্ষার্থী এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।’গ্রেফতাকৃত জঙ্গিরা হলেন- মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে শাদী, শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল, মাসরিক আহমেদ, মো.আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেক ও এস এম তাসমিন রিফাত।মনিরুল ইসলাম বলেন, এই পাঁচ জন পুলিশের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হামলাটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে সাদী। বাকিরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছিল। এদের মধ্যে মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে সাদী ও শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-র শিক্ষার্থী।

তিনি আরও বলেন, সাদী হামলার জন্য এক্সক্লুসিভ ডিভাইস বা আইডি’ তৈরি করার যন্ত্রাংশও সংগ্রহ করেছিল। সর্বশেষ রাজধানীর দুইটি জায়গা থেকে যে দুইটি আইডি উদ্ধার করা তার সঙ্গে এসব যন্ত্রাংশের মিল রয়েছে। আর শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল একদিকে আধ্যাত্মিক নেতা এবং সে এই হামলার জন্য অর্থ যোগান করার চেষ্টা করছিল। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে সে কিছু অর্থ এই হামলার জন্য জোগাড় করেছিল।মনিরুল ইসলাম বলেন, মাসরিক আহমেদ এর দায়িত্ব ছিল যশোর থেকে অস্ত্র সীমান্ত দিয়ে পারাপার করে নিয়ে আসা এ হামলার জন্য। আর বাকি দুইজন সদস্য সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করে আসছিল।পুলিশের ওপর কেন হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা দেখেছে হলি আর্টিজানের পর পুলিশের হাতে সব থেকে বেশি জঙ্গি নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছে। সেই জায়গা থেকে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে তারা পুলিশের উপর হামলার পরিকল্পনা করছিল। পুলিশকে ভীত করার জন্য এই হামলার পরিকল্পনা। এছাড়া পুলিশের উপরে হামলা করলে সাধারণ মানুষ যেন আরও ভীত হয় এবং ভাবে যে পুলিশের উপরে হামলা হয়েছে প্রতিরোধ করতে পারছে না, তো সাধারন মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে দিবে।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, এই ৫ জনের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত আছে এই পরিকল্পনায়। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারলে আরও তথ্য জানা যাবে। তারা যে হামলার জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করেছিল তা কৌশলগত কারণে আমরা বলছি না। আগে উদ্ধারকৃত দুইটি আইডির সঙ্গে এদের কোনো যোগসাজশ আছে কিনা সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।কাশ্মীর ও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ জঙ্গিদের অনেক সময় উৎসাহিত বা অনুৎসাহিত করে। নিউজিল্যান্ডের হামলা পর শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলা হয়। এই হামলাটিকে বিশ্বের জঙ্গি এক্সপার্টরা বলে থাকেন যে নিউজিল্যান্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় হামলা করা হয়েছে। এই দুটি ঘটনার পর বাংলাদেশ গত ঈদের আগে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি ছিল। কিন্তু এটা আমরা সফলভাবে প্রতিরোধ করা গেছে। সর্বশেষ কাশ্মীরের ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় সে বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করাটা সমুচিত হবে না।তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যাতে নতুন করে জঙ্গি রিক্রুট না হতে পারে সেই বিষয়ে আমাদের নজর রয়েছে।