ইনিউজ৭১ -এ সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সেই ফিটনেসবিহীন লঞ্চে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ৫ই আগস্ট ২০১৯ ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
ইনিউজ৭১ -এ সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সেই ফিটনেসবিহীন লঞ্চে নিষেধাজ্ঞা

অন-লাইন নিউজ পোর্টাল ই-নিউজ একাত্তরে রবিবার যাত্রীদের মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলছে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘন্টার মাথায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলের হস্তক্ষেপে সেই ফিটনেসহীন লঞ্চ  এম,ভি জাহিদ-৭ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ওই সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পরলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংসদ আলী আজম মুকুলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অসংখ্য পোষ্ট ও শেয়ার লক্ষ্য করা গেছে। সাংসদ আলী আজম মুকুলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নীল রতন দে নামের এক শিক্ষক লিখেছেন,সংসদ সদস্যের তড়িৎ উদ্যোগকে স্বাগত: জানাই, সেসাথে নূন্যতম সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত লঞ্চের ব্যবস্থা যেন করা হয়। নজরুল ইসলাম নামের  এক সংগঠক লিখেছেন, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার লঞ্চটি সরিয়ে দিয়ে সংসদ সদস্য নি:সন্দেহে এলাকার অভিভাবকের কাজ করেছেন। তবে মানসম্মত লঞ্চ  দেয়া সময়ের দাবি। আব্দুল মালেক নামের এক সমাজকর্মী লিখেছেন, এ পদক্ষেপ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকের প্রাণের দাবি ছিল। বিশেষ করে পৌর শহরের ব্যবসায়ীদের কষ্ট লাঘব হয়েছে।

ভোলা-২(বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান)আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ঢাকা থেকে মুঠোফোনে জানান,রবিবার রিপোর্ট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লেখালেখি দেখে ওইদিন সচিবালয়ে আমি নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ে যাই। বোরহানউদ্দিন-ঢাকা নৌরুটে যাত্রীদের মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ফিটনেসহীন এমভি জাহিদ-৭ লঞ্চটি চলছে তা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদকে প্রমান সহ বিস্তারিত জানাই। তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে ওই লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বিআইডব্লিউটিএকে নির্দেশ দেন। বিআইডব্লিউটিএ ভোলা জেলা প্রশাসন ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসনকে ওই লঞ্চ  আসলে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি আরো বলেন, মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেয়া হবেনা।

উল্লেখ্য, এমভি জাহিদ লঞ্চটির পাশের দিক ও পেছনের অংশে অনেকগুলো ছোট-বড় ফাটল থাকা সত্তে¡ও  শত শত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। বিকল্প কোনো লঞ্চ না থাকায় উপায়ান্তর না থাকায় যাত্রীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ লঞ্চে  যাতায়াত করছেন। বৈরী আবহাওয়ায় লঞ্চটি যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনায় পড়ে প্রাণহানী হওয়া বিচিত্র নয়। এদিকে গত শুক্রবার এ প্রতিবেদক সহ অন্যান্য সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে লঞ্চে  গেলে লঞ্চটির নাজুক অবস্থা দেখা যায়। বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা সাত দিনের মধ্যে লঞ্চটি মেরামত করে ফিটনেস উপযোগী করে লঞ্চ চালানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু  দুই দিনের মাথায় শুক্রবার কিছু স্থানে জোড়া-তালি দিয়ে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসে। তখন ওই লঞ্চের ম্যানেজার জাহিদ, সুপারভাইজার সুমন ও মাষ্টার মো. মোতালেব দাবি করেন, কেবিনের কিছু সমস্যা ছাড়া যেটুকু কাজ করিয়েছেন তা যথেষ্ট। 

তখন ওই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. খালেদা খাতুন রেখা ও ভোলা নদী বন্দরের বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী-পরিচালক মো. কামরুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তারা জানান, কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সংবাদকর্মীরা চলে গেলে সমস্যা আন্দাজ করে ওই লঞ্চ  দ্রুতবেগে ঘাট ত্যাগ করার সময় ফকির বাড়ির মোড়ে একটি বালুবাহী ড্রেজার ও দুইটি নৌকাকে সজোঁড়ে ধাক্কা দেয়। ওই সময় ড্রেজার ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। ড্রেজার ও নৌকায় থাকা মো: জাবেদ (৪০), মো: রিয়াজ (৩৫), মো: এমরান (২৫) নামের তিন ব্যাক্তি মারাক্তক আহত হয়। জাহিদ-৭ লঞ্চের ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, রোববার বিআইডব্লিউটিএ থেকে ওই লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. খালেদা খাতুন রেখা জানান, ফের  ওই লঞ্চ  আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব