প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ২২:২৭
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের বিষয়টি বাংলাদেশের স্বার্থে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি জানান, সরকার প্রয়োজনে ছয় মাসের নোটিশে এই কার্যালয় প্রত্যাহার করতে পারবে, তবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন না। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি দুই বছর পর পর্যালোচনা করা হবে এবং এই বিষয়টিতে বিশেষজ্ঞদের ভিন্নমত থাকলেও সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। জাতিসংঘ প্রস্তাব দিলে তা তৎক্ষণাৎ সাইন করা হয়নি, বরং সময় নিয়ে বিশ্লেষণ করে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের জলবায়ু ও নদীর উৎস সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদীর উজানে নির্মিত চীনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রোধ করা সম্ভব নয়, তবে বাংলাদেশ সতর্ক থাকবে যেন কোন বড় ধরনের ক্ষতি না হয়। চীনা রাষ্ট্রদূত আশ্বস্ত করেছেন যে, প্রকল্পগুলো ধাপে ধাপে চালু হচ্ছে এবং এতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা পানিপ্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে না। তাই এই প্রকল্পকে ঘিরে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনার বিষয়ে তৌহিদ হোসেন জানান, আলোচনা এখনও শেষ হয়নি এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করার আগে আলোচনাকারীদের কথা শুনার পরামর্শ দেন। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সীমাবদ্ধতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের নিজের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনাকে আরও সুশৃঙ্খল করতে হবে। আবেদনকারীদের উচিত সঠিক ও বৈধ তথ্য প্রদান করা। অতীতে একাধিক পাসপোর্ট থাকার ঘটনা যেমন ছিল, এখন তা কঠিন হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ভারত থেকে আসা চিকিৎসক দলের উপস্থিতিকে প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবসময় ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিকতার ভিত্তিতে কাজ করতে চেয়েছে এবং এ সম্পর্ক অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে নদী সংক্রান্ত সমস্যা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও সরকারের সচেতন অবস্থান বজায় রেখেছে।
সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।