প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ২১:৫৬
ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। আহত হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ১৭১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই তথ্য সোমবার রাতের দিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে, যেখানে ৭০ জন ভর্তি রয়েছেন এবং ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিএমএইচ-ঢাকায় ১৭ জন চিকিৎসাধীন, নিহত ১২। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৩ জন আহত, ১ জন নিহত, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহত থাকলেও কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। অন্যান্য হাসপাতালে মোট ১৭১ জন আহত রয়েছেন, তাদের সবাইকে বিভিন্ন হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ও জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না ঘটে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেন। আহতদের হাসপাতালে পৌঁছাতে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হয়।
এই দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হতাহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তদান ও অন্যান্য জরুরি সহায়তার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রেকর্ড অফিস একটি ২৪/৭ জরুরি সেল চালু করেছে। যারা রক্ত দিতে ইচ্ছুক, তারা মোবাইল নম্বর ০১৭৬৯৯৯৩৫৫৮ (হোয়াটসঅ্যাপ) এ যোগাযোগ করতে পারবেন।
দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এই দুর্ঘটনার কারণে। প্রশাসন সকলকে আহ্বান জানিয়েছে, আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে যেন হাসপাতালগুলোর আশেপাশে অপ্রয়োজনীয় ভিড় না হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।