প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ২১:২৩
রাজধানীর উত্তরা এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর ১টার কিছু পরে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ভেঙে পড়ে, মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস, যাদের মধ্যে স্কুলের বহু শিক্ষার্থী রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। এরপরই দেখা যায় আগুন আর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে স্কুল ভবনের একটি অংশ। দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী ও বিজিবিও যোগ দেয়। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে ঢাকা সিএমএইচ এবং অন্যান্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে সাতটি শিশু, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় আরও ১২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের শরীর ৫০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে, তাদের মৃতদেহ দ্রুত স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাসপাতাল এলাকা ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস আহতদের চিকিৎসা বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন বলে জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কীভাবে একটি প্রশিক্ষণ বিমান লোকালয় অতিক্রম করছিল এবং কেন তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হলো, সেই প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের সাধারণ নাগরিকরা।
এ ঘটনায় গোটা জাতি স্তব্ধ হয়ে গেছে। নিহতদের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, "কি জবাব দিবে এখন জাতি? অভাগা জাতির কপালে বারবার এই ধরনের দুর্ঘটনা কেন?"