প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৭
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে শুরু হলো মাসব্যাপী 'জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালা'। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর সূচনা করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠান চলবে মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। আজকের সূচিতে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে শহিদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহিদদের স্মরণে শিক্ষাবৃত্তি চালুর ঘোষণাও রয়েছে।
আজ জুলাই ক্যালেন্ডার উন্মোচন করা হবে এবং একই সঙ্গে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচিরও সূচনা হচ্ছে। এই গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত, যেখানে দেশের প্রতিটি জেলা ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। এভাবে জাতি পুনরায় স্মরণ করবে সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়কে, যা দেশের ইতিহাসে গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল।
জুলাই মাসে বিভিন্ন তারিখে অনুষ্ঠান থাকবে। ৫ জুলাই, ৭ জুলাই এবং ১৪ জুলাইয়েও আলাদা আলাদা আয়োজনে স্মরণ করা হবে শহিদদের অবদান। প্রতিটি আয়োজনে থাকবে আলোকচিত্র প্রদর্শনী, কবিতা পাঠ, সেমিনার এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। এছাড়াও থাকবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন যা স্মরণীয় করে তুলবে আন্দোলনের সেই দিনগুলোকে।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান হবে ৫ আগস্ট, যেদিন এই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী। এই দিনে দেশের ৩৬টি জেলায় একযোগে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে বিজয় মিছিল বের হবে, যেখানে থাকছে এয়ার শো, গান ও নাটকের পরিবেশনা এবং ৩৬ দিনের ঘটনাবলি নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন।
৫ আগস্ট ‘৩৬ জুলাই’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই দিনেই শেয়ার করা হবে বিপ্লবের ভিডিও ডকুমেন্টেশন এবং একটি ড্রোন শোর মাধ্যমে সমাপ্তি টানা হবে এই অনুষ্ঠানমালার। ‘৩৬ ডেইস অব জুলাই’ শিরোনামে একটি আর্কাইভ প্রজেক্টও উদ্বোধন করা হবে যা আগামী প্রজন্মকে এ বিপ্লবের ইতিহাস জানাতে ভূমিকা রাখবে।
গত বছরের এই দিনে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জন্ম নেওয়া এই বিপ্লবকে জাতি স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে।
‘জুলাই বিপ্লব’ হিসেবে পরিচিত এই আন্দোলনের পেছনে ছিল ছাত্র সমাজের সাহসী ভূমিকা ও দেশের সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই, যা ইতিহাসের পাতায় নতুন অধ্যায় রচনা করে।
এই মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে সেই ইতিহাসের স্মৃতি আরও দৃঢ় হয়ে উঠবে, নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছাবে বিপ্লবের বার্তা এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধ আরও গভীরে প্রোথিত হবে।