প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:৩০
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ছয়জন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকি, ঘুষ গ্রহণ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এনবিআরের কিছু অসাধু সদস্য করদাতাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কিছু কর কর্মকর্তা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দিয়ে করদাতাদের হয়রানিও করছেন। আবার অনেক করদাতা বেশি কর দিলেও তা ফেরত নিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপহার কিংবা ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিযোগ আছে, ওই টাকা ফেরতের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও নিজেদের জন্য অংশ রেখে দিচ্ছেন। এতে সরকারি টাকা ব্যক্তিগত পকেটে চলে যাচ্ছে।
এছাড়া গত দুই যুগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে কর্মরত অবস্থায় শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকির সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন এমন কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনেরও অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে থাকা কর্মকর্তারা হলেন— এনবিআরের আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ এর উপ-কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, এনবিআরের গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদার এবং ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু।
এদিকে এই অনুসন্ধান এমন এক সময়ে শুরু হয়েছে, যখন এনবিআরের পুনর্গঠন ও চলমান অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। সরকার জানিয়েছে, কর আদায় ও আর্থিক সুশাসন নিশ্চিতে যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দুদকের এ অনুসন্ধান আগামীতে কর ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকের মতে, এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি ও দ্রুত বিচার না হলে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থা চরম সংকটে পড়বে।