প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১৬:৩৯
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার, অন্যথায় দেশের অর্থনীতি ও জনস্বার্থ রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন। রোববার এক বিবৃতিতে সরকার জানিয়েছে, রাজস্ব বোর্ড পুনর্গঠনের সিদ্ধান্তের পর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচির ফলে আমদানি-রপ্তানি, বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
সরকার মনে করে, বাংলাদেশে রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থা বহুদিন ধরেই দুর্বল, যেখানে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যে রাজস্ব দরকার, তা তুলনায় অনেক কম আদায় হচ্ছে, যার ফলে দেশের বাজেট কাঠামো ও উন্নয়ন কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। এই বাস্তবতায় এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে এবং সেই উদ্দেশ্যেই সরকার সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগের বিরোধিতায় এনবিআরের একাংশ নজিরবিহীন আন্দোলন শুরু করে, যা গত দুই মাস ধরে চলমান। আন্দোলনের নামে সরকারি অফিস কার্যত অচল করে তোলা হয়েছে, যার প্রভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম, পণ্য খালাস ও রাজস্ব আদায়ে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সরকারের বিবৃতিতে এই আন্দোলনকে পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী বলা হয়েছে। সরকার বলেছে, আলোচনা ও সংলাপের আহ্বান বারবার জানানো হলেও আন্দোলনকারী পক্ষ তা উপেক্ষা করেছে এবং অনমনীয় অবস্থানে থেকে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সরকার আরও জানিয়েছে, রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে এসব অফিসের কার্যক্রম চালু রাখা যায়।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরে আসবেন না, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘোষণার পর রাজস্ব দপ্তর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দিলেও আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা অংশটি এখনও সরকারের অবস্থান নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।