প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১২:১৩
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের বৈঠক রোববার বেলা ১১টায় শুরু হয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। আলোচনায় মূলত সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের গঠন, উচ্চকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং তার কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা চলছে।
সংস্কার প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় আগে প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)’ গঠনের প্রস্তাব থেকে সরে এসে নতুনভাবে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব সামনে আনা হয়েছে। তবে এই প্রস্তাব নিয়ে বিএনপি আপত্তি তুলেছে, কারণ এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মনে করে।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব নিয়ে আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে বিএনপি। এ বিষয়ে তারা কিছু শর্তসাপেক্ষে সম্মতি জানিয়েছে। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলো এই ধরনের নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে নেতৃত্ব পরিবর্তনের গুরুত্ব নিয়েও মত দিয়েছে।
বিগত বৈঠকগুলোতে সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে যে বিতর্ক ছিল, তা এখন অনেকটাই নিরসন হয়েছে। বামপন্থি কিছু দল ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এতে একমত হয়েছে। পাশাপাশি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন এবং ১০০ নারী আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবও বেশিরভাগ দলের সম্মতি লাভ করেছে।
উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও। একাধিক দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি ও তার ক্ষমতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিচ্ছে এবং একটি গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া খুঁজে বের করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বৈঠকের এ পর্যায়ে নতুন প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আলোচনা আরও গভীরতর হয়েছে। অংশগ্রহণকারী দলগুলো আশা করছে, আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই রাজনৈতিক কাঠামোর রূপরেখা তৈরি হবে।
এর আগে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, গণসংহতি, নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি সহ ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৪৫টি পৃথক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনার এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীরা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।