প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ২০:১০
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ সোমবার জানিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। জাতীয় সংসদ ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। পাশাপাশি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের বিষয়ে অধিকাংশ দল নীতিগত সম্মতি প্রকাশ করেছে বলে জানান তিনি।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আরো কিছু আলোচনা প্রয়োজন থাকলেও, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগত একমত প্রকাশ করেছে। বিচার বিভাগ সংস্কার এবং নির্বাচন কমিশন বিষয়েও যথেষ্ট সমঝোতা হয়েছে। তবে বিচার বিভাগের কিছু বিষয়ে আইনজীবীদের মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে অংশগ্রহণকারীরা।
নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আলোচনায় সকল দল পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের পক্ষে একমত হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইসির অধীনে পরিচালনার বিষয়েও অধিকাংশ দলের সমর্থন রয়েছে। নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে জনগণের মতামত জানার জন্য বিবিএসের মাধ্যমে জরিপ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন ব্যর্থ হলে তদন্ত করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে প্রতিবেদন প্রেরণ এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান করার জন্যও অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদ নির্বাচনে বাধা দেয়ার লক্ষ্যে আরপিও সংশোধন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে অধিকাংশ দল সম্মত হয়েছে। এছাড়া তিনটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠনের প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত প্রকাশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রথম ধাপের আলোচনায় উঠে এসেছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কার ও প্রয়োজনীয় আইনি পরিবর্তনের ভিত্তি, যা ভবিষ্যতে গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে সাহায্য করবে।
এভাবে, দেশের রাজনীতিতে ঐক্যের ভাবনা আরো দৃঢ় হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন সংকট মোকাবেলায় সংলাপে মনোনিবেশ করছে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আগামী সময়ে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশের শাসনব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ ও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।