প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১৬:৩৯
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। সোমবার সেনা সদরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি করিডোর ইস্যুতে সাংবাদিকদের এমন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সকলের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে এবং দেশের নিরাপত্তায় আপোষহীন থাকবে।’
লে. কর্নেল শফিকুল ইসলাম মব তৈরির বিরুদ্ধে সতর্কতা দিয়ে বলেন, ‘যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ দেশের স্বার্থে শান্তি ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রামের একটি কারখানায় কেএনএফের পোশাক উদ্ধারের ঘটনায় সেনাবাহিনী গভীরভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ প্রতিরোধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র, ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়া আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সময়ে বিভিন্ন অপরাধে ১ হাজার ৯৬৯ জন এবং মোট ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, দালাল চক্রসহ বিভিন্ন অপরাধী।
গত ২০ মে ভাষানটেক এলাকায় পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে সন্ত্রাসী হিটলু বাবুসহ তার ১০ সদস্যকে আটক করা হয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তার বোধ জাগিয়েছে। এছাড়া মাদকবিরোধী অভিযানে গত ৪০ দিনে ৪৮৭ জন মাদক ব্যবসায়ী এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে যুক্ত ৪ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা ও অবৈধ মদ উদ্ধার করেছে সেনারা।
শিল্পাঞ্চল এলাকার নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ভেজাল শিশু খাদ্য ও বিপণনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে বিপুল পরিমাণ জেলি মিশ্রিত চিংড়িসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক করায় জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থা বেড়েছে।
জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনের সময় আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী ৪৫৯৬ জনকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা ও যানবাহনের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিত করতে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সেনাবাহিনী। এতে জাতীয় মহাসড়ক, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে টহল ও স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হবে। টিকিট কালোবাজারি ও অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রির বিরুদ্ধে সচেতনতা চালানো হবে।
সেনাবাহিনী জানায়, তারা জনগণকে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানোর সুযোগ ও নিরাপদ পরিবেশ দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন ঈদ উদযাপনে সহায়তা করবে।