প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০:১৬
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
বরিশালের কাশিপুরে পারিবারিক বিরোধের জেরে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বিল্লবাড়ি এলাকায় বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা লিটন সিকদার লিটু (৪২) কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে একদল উত্তেজিত জনতা। নিহত লিটু বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এ ঘটনায় লিটুর ছোট ভাই সুমন (৩৫) ও বোন মুন্নি বেগম গুরুতর আহত হন। তাদেরকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত লিটুর বোন মুন্নি বেগম ও তার স্বামী জাকির গাজীর দাম্পত্য কলহকে কেন্দ্র করে। মুন্নির অভিযোগ, তার স্বামী গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন, যা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ তীব্র হয়। পরবর্তীতে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে।
বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তির পর জাকির গাজী পুলিশ প্রহরায় স্ত্রী মুন্নিকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তখন পূর্বশত্রুতার জেরে একদল লোক অতর্কিতে লিটুর পরিবারের ওপর হামলা চালায়। তাদের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ মারাত্মক হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা প্রথমে লিটুকে পিটিয়ে এবং পরে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। তার ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে সরে যায়। পরে আবার ফিরে এসে লিটুকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে।
তবে তখন উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে লিটুকে ছিনিয়ে নিয়ে আবারও কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনাস্থলে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের দাবি, নিহত লিটু এলাকায় একজন বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। এমনকি কিছুদিন আগে তিনি তার বোন জামাতা জাকির গাজীকে গোপনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দিয়ে নির্যাতন করেন বলেও জানা গেছে।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপও দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং তাদের প্রভাবেই পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করেছে।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির শিকদার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং বিস্তারিত পরে জানানো হবে।