প্রকাশ: ১ আগস্ট ২০২৫, ১১:১১
জুমার দিন সপ্তাহের সেরা ও সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। রাসুল (সা.) এই দিনকে ঈদের দিনের মতো মর্যাদা দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে জুমার দিনের বহু ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও আখিরাতের জন্য এক বিরাট হেদায়াতের উৎস। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য শুধু নামাজের নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, দোয়া কবুলের এবং আল্লাহর করুণা পাওয়ার শ্রেষ্ঠ সুযোগ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যেখানে বান্দা আল্লাহর কাছে যেকোনো হালাল কিছু চাইলে তা কবুল হয়। (সহিহ মুসলিম) এটি আমাদের জীবনের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ—নিজের ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চাওয়া, রিজিক বৃদ্ধি, রোগ মুক্তি, এবং দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণের জন্য দোয়া করার শ্রেষ্ঠ সময়।
জুমার দিনে বিশেষভাবে গোসল, পরিষ্কার পরিচ্ছদ, সুগন্ধি ব্যবহার, এবং মসজিদে গিয়ে খুতবা শোনার পর নামাজ আদায় করাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু ইবাদতের অংশ নয়, বরং সামাজিক সংহতি ও সম্মিলিত চেতনাকে জাগ্রত করার একটি উপায়।
এই দিনের আরেকটি বড় ফজিলত হলো সূরা কাহফ পড়া। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ পড়ে, আল্লাহ তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে নূর তৈরি করেন। এটি দুনিয়ার অন্ধকার পথ থেকে আলোতে ফিরিয়ে আনার প্রতীক।
জুমার দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো, সপ্তাহের এই দিনে নিজের আমল ও জীবন পর্যালোচনা করা। বিগত সপ্তাহে কী করলাম, কোন ভুল হলো, কোথায় উন্নতি প্রয়োজন—এই চিন্তা আমাদের আত্মশুদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
জুমার দিনে দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের পাশাপাশি আল্লাহর রহমতের দ্বারও খুলে দেয়।
বর্তমান সময়ে যখন বৈশ্বিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে নানা সংকট ও হতাশা ঘিরে ধরেছে, তখন জুমার দিন আমাদের জন্য হতে পারে মানসিক প্রশান্তি ও আত্মিক স্থিতির এক বড় আশ্রয়।
তাই আসুন, আমরা পবিত্র জুমার দিনটিকে কেবল একটি ছুটির দিন হিসেবে না দেখে, বরং আত্মিক উন্নতির দিন হিসেবে পালন করি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে আমল করি, নিজেদের ও জাতির কল্যাণের জন্য দোয়া করি, যেন এই দিনটি আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ বয়ে আনে।