প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ১৯:৩৫
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বেশি। পরিকল্পনা কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রোববার এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায়।
এ সভায় এডিপির খসড়া অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানান। সংশোধিত এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ নতুন উন্নয়ন বাজেট মূল এডিপির তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম হলেও সংশোধিত বাজেটের তুলনায় তা কিছুটা বেশি।
নতুন এডিপিতে মোট ১ হাজার ১৪২টি প্রকল্পে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপির তুলনায় বৈদেশিক ঋণ এবং সরকারি অর্থায়ন উভয়ই কমানো হয়েছে।
এবারও বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৫.৬৪ শতাংশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা, যা ১৪.০৮ শতাংশ।
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা (১২.৪২ শতাংশ), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধায় বরাদ্দ ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি (৯.৯০ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা (৭.৮৯ শতাংশ)। এই পাঁচ খাতেই বরাদ্দ হয়েছে মোট বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশ।
বাকি খাতগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৩ হাজার ৪৭২ কোটি, কৃষিতে ১০ হাজার ৭৯৫ কোটি, পরিবেশ ও পানিসম্পদে ১০ হাজার ৬৪১ কোটি, শিল্প ও অর্থনীতিক সেবায় ৫ হাজার ৩৮ কোটি এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদন খাতে বরাদ্দ ৩ হাজার ৬৭৫ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ২ হাজার ৭৭৭ কোটি, সামাজিক সুরক্ষায় ২ হাজার ১৮ কোটি, সাধারণ সরকারি সেবায় এক হাজার ৮৭৭ কোটি এবং প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ মাত্র ৪৭৫ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের মতে, সরকারের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে বাস্তবমুখী ও টেকসই উন্নয়নের দিকেই এবার জোর দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্পের সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে বরাদ্দের মান ও প্রভাব বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।