প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ২০:৪৩
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় চালু করতে গিয়ে দেশটি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে প্রধানত মানবপাচার ও মানিলন্ডারিং ইস্যুতে হওয়া মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি অন্যতম। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও লুৎফি সিদ্দিকি, যেখানে শ্রমিক প্রেরণ ও অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
বৈঠকে মালয়েশিয়া সরকার জানায়, কিছু বাংলাদেশি এজেন্সির বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার ফলে দেশটির ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২২ সালের আগস্ট থেকে প্রায় ৪ লাখ ৭৬ হাজার শ্রমিক সঠিক নীতিমালা অনুসরণ করে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছে, তাই মানবপাচারের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মালয়েশিয়ার দুই মন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল ও স্টিভেন সিম চি কেও বৈঠকে উপস্থিত থেকে অভিবাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, ব্যয় হ্রাস এবং শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন কাঠামো তৈরির পক্ষে মত দেন। তারা বিশেষভাবে সহযোগী এজেন্সি ব্যবস্থার অপব্যবহার বন্ধ করার উপর গুরুত্ব দেন।
বৈঠকে উঠে আসে, কোনো শ্রমিক যদি ২ লাখ টাকার মধ্যে মালয়েশিয়ায় যেতে পারেন তবে প্রতারণার আশঙ্কা কমবে এবং অভিবাসন ব্যয় সাশ্রয়ী হবে। একই সঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধের কথাও বলা হয়।
মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে ১২ লাখ শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মালয়েশিয়ার সাধারণ শ্রমিকদের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের তুলনায় দ্বিগুণ হওয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের আগ্রহ বেড়েছে।
বিগত বছর কিছু প্রশাসনিক জটিলতায় এই বাজার স্থগিত থাকলেও নতুন আলোচনার মাধ্যমে তা পুনরায় সচল হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশের কুয়ালালামপুর দূতাবাসের মতে, পর্যাপ্ত শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রেমিটেন্স অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করেন, মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত কম খরচে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা, যাতে দেশের শ্রমিকরা প্রতারণা ছাড়াই মালয়েশিয়ায় পৌঁছাতে পারেন।