প্রকাশ: ৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৪৭
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমিতে আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল বুধবার, যখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেদিন যে দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল, তার বর্তমান অবস্থান আজ বিশ্বে প্রশংসিত। তবে, সেই স্বাধীনতার দিনগুলির স্মৃতি এখনও কাঁদায়, এমনটাই বলেছেন ড. ইউনূস। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল, যার মধ্যে প্রধান ছিল দুর্ভিক্ষ এবং অল্প সংস্থান নিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা।
ড. ইউনূস বলেন, "১৯৭১ সালে প্রাণ ত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশের সূচনা হয়। তখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৬ কোটি, যা আজ ১৮ কোটিতে পৌঁছেছে।" এরপর তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করেন, যেখানে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং পুরো দেশটি অভ্যন্তরীণ সমস্যার শিকার ছিল। তিনি আরও বলেন, "তখন আমাদের কাছে কৃষিই ছিল একমাত্র জীবিকা, আর তিন চতুর্থাংশ কৃষকের নিজেদের জমি ছিল না।"
এ সময় তিনি চোখে জল নিয়ে জানান, "আমরা তখন একটিই ফসল ফলাতাম, আর আমাদের জীবনে প্রচুর কঠোরতা ছিল।" ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে পরিস্থিতি উন্নত করার উদ্যোগ নিয়ে আসে। গরীব মানুষদের সহায়তা দেওয়ার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আজ একটি বৈশ্বিক মডেল হয়ে উঠেছে। "আমরা কোন পথে যাব তা জানতাম না, কিন্তু আজ তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত," বলেন তিনি।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে ড. ইউনূস বলেন, "আপনি যে দেশে বসবাস করেন না কেন, আপনার মধ্যে ১৯৭৪ এর এক টুকরো বসবাস করছে। আমি সব সময় বলেছি, জনগণের অর্থ গরীব মানুষের হাতে দেওয়া সমাধান নয়, সমাধান হল অবকাঠামো তৈরি করা এবং মানুষের শক্তি বের করে আনা।" তিনি আরও বলেন, "যখন আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলি, তখন তারা আমাদের দেশের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। তারা এখানে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে চায়, বড় বড় বাজারে কথা হয়, আর তরুণ জনগণের শক্তি নিয়ে আলোচনা হয়।"
শেষে, তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ২০২৫ সালের বাংলাদেশের উন্নতির যাত্রাকে স্মরণ করে বলেন, "আজকের বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী জাতি, যাদের স্বপ্ন আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে।"