প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১১:২
মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে তিনজনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, শিল্প মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তিনি এই বিপুল অঙ্কের টাকা নেন এবং পরে আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে খোকন শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতেও দায়িত্ব পান।
স্থানীয়দের মতে, গাংনী উপজেলার কাজিপুর, বামন্দী ও হাড়াভাঙ্গা গ্রামের তিনজন যুবক ও নারীকে তিনি নিজ বাসায় ডেকে এনে চাকরির আশ্বাস দিয়ে পর্যায়ক্রমে টাকা নেন। অভিযোগে জানা যায়, কাজিপুর গ্রামের যুবককে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের কথা বলে ১০ লাখ টাকা, বামন্দী গ্রামের যুবককে অফিস সহকারী পদে চাকরির আশ্বাসে আরও ১০ লাখ এবং হাড়াভাঙ্গা গ্রামের এক নারীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির প্রতিশ্রুতিতে ১৫ লাখ টাকা নেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ে চাকরির জন্য আমি দুটি কিস্তিতে মোট ১০ লাখ টাকা দিই। এমপি সাহেব আশ্বাস দেন চাকরি কনফার্ম। কিন্তু আজও চাকরি হয়নি, বরং উল্টো তিনি আর যোগাযোগ করেন না। অন্য একজন জানান, তার কাছ থেকে তিন দফায় টাকা নিয়ে চাকরি নিশ্চিত করার কথা বলেন খোকন। সময় পার হলেও কোনো খবর নেই, বরং এখন তিনি আত্মগোপনে।
আরেক নারী জানান, তার শ্বশুরের পরিচয়ে খোকনের কাছে যান এবং ১৮ লাখ টাকার দাবি করলে শেষমেশ ১৫ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করেন তারা। কিন্তু চাকরি তো হয়ইনি, বরং টাকাও ফেরত পাননি। পরে মামলা করতে চাইলেও তার ক্ষমতাশালী অবস্থান ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ভয় পেয়েছিলেন।
বর্তমানে সাবেক এমপির ব্যবহৃত ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। ভুক্তভোগীরা বলছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে প্রতারণা করে টাকা আদায় করেছেন, এখন আর কিছুই করার নেই। এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ একটি গুরুতর অপরাধ। খোকনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলছে এলাকাবাসী। অনেকে বলছেন, এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ দরকার। এখন দেখার বিষয়, ভুক্তভোগীদের হারানো অর্থ আদৌ ফিরে আসবে কিনা।