প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১১:৬
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন উত্তেজনা, তেমনি জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত মিলেছে। বৈঠক শেষে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং না দিলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি সম্ভবত ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার পথ তৈরি করবে।
লন্ডনের আলোচিত বৈঠকের রেশ ধরে এই বৈঠককে অনেকে ফলোআপ বলেই মনে করছেন। ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে বলা হয়েছিল, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এর আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হওয়ায় তারা সিদ্ধান্তে আসেননি। তবে সরকারের 'ভাব' বোঝার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজনৈতিক মহলে ধারণা, এখন সেই 'ভাব' অনুধাবনের পর্যায়ে পৌঁছেছে নির্বাচন কমিশন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ বাড়ানো হচ্ছিল নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার জন্য। বিশেষ করে বিএনপিসহ কিছু দল একাধিকবার সরাসরি সরকারের প্রতি ইসিকে নির্দেশনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান মনে করেন, সংবিধানের কার্যকারিতা যেভাবে ক্ষীণ হয়েছে, তাতে কমিশনের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়া বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তার মতে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সিইসি সম্ভবত ফেব্রুয়ারির বার্তা পেয়েছেন এবং তা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আগেই ডিসেম্বরের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল, তবে এখন ফেব্রুয়ারি সময়সীমা নির্ধারণ হলে তা বড় চমক হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মনে করেন, লন্ডনের বৈঠকে ফেব্রুয়ারি সময়সীমা নিয়ে যে আভাস দেওয়া হয়েছিল, এই সাম্প্রতিক বৈঠক সেটিরই ধারাবাহিকতা।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের দৃষ্টি এখন রবিবারের দিকে, যেখানে সিইসি ফুল কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেন। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষাই একমাত্র উপায়।