প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১১:১৪
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল-জোড়পুকুর ডিগ্রি কলেজের ফান্ডের টাকায় কেনা ৪২ শতক জমি সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি লাইলা আরজুমান বানুর নামে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, কলেজের জন্য কেনা হলেও জমিটি নিজের নামে নেন তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের সহধর্মিণী লাইলা আরজুমান বানুকে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরই এই জমি ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কলেজের বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি জুলফিকার আলি ভুট্টো জানান, পার্শ্ববর্তী হওয়ায় ৪২ শতক জমি কলেজের জন্য কেনার বিষয়ে জমির মালিক প্রভাষক ফিদা হাসান ও তার বোনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার দর-কষাকষি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সাব-রেজিস্টারকে সংসদ সদস্যের বাসভবনে নিয়ে গিয়ে জমি কলেজের ফান্ড থেকে কেনা হলেও রেজিস্ট্রি হয় সাবেক সভাপতির নামে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিন্টু এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
জমির মালিক প্রভাষক ফিদা হাসান বলেন, তিনি ও তার বোন জমিটি বিক্রি করেছেন। তিনি কলেজের জন্য কেনা জমি তার নামে কেন রেজিস্ট্রি করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে সংসদ সদস্য তাকে জানিয়েছিলেন, পরে কলেজকে জমিটি ফেরত দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে তিনি এবং তার বোনের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুম উল হক মিন্টু বলেন, তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার আগে সমস্ত হিসাবনিকাশ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এবং কলেজের টাকা দিয়ে এমপির স্ত্রীর নামে জমি কেনার বিষয়ে অবগত নন। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের বেসরকারি কলেজগুলোতে যেভাবে কাজ চলে, তিনি তেমনভাবেই কলেজ পরিচালনা করেছেন।
সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট থেকে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন ও তার সহধর্মিণী লাইলা আরজুমান বানু আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এই জমি রেজিস্ট্রির ঘটনা কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্ররা বিষয়টিকে নজরদারিতে রাখার পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চুপ থাকা নানা প্রশ্নও সৃষ্টি করেছে।
আগামী দিনে জমি রেজিস্ট্রি ও কলেজ ফান্ড ব্যবহারের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।