প্রকাশ: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২:২৮
ধর্ম, জাতি ও রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও আমরা একে অপরের শত্রু নই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা একটি পরিবার। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য, ধর্ম, রীতি-নীতি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। শত পার্থক্যের মধ্যেও আমরা বাংলাদেশি, আমাদের সম্পর্ক শত্রুতার নয়।”
তিনি আরও জানান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কথা শুনে তার মন খারাপ হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভুল তথ্য ও অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন বিষয়গুলোকে জটিল করে তোলে। “ভুল তথ্যের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রকৃত তথ্য যাচাইয়ের একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যাতে সঠিক দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা যায়,” বলেন ইউনূস।
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুর্গাপূজায় দেশের সবার অংশগ্রহণ দেখে ভালো লেগেছে। তবে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার বিষয়ে বিশাল তথ্যগত ফারাক দেখা যায়। এর অবসান হওয়া জরুরি।”
বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমদুল্লাহ, বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব আবদুল মালেক এবং কবি ফরহাদ মজহারসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. ইউনূস জানান, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে যে অপপ্রচার চলছে, তা মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য জরুরি। তিনি বলেন, “ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে জাতীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।"
সম্প্রতি বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হামলাসহ একাধিক ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ড. ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আহ্বানে ইতোমধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত নেতারা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন।