ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ মে) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিস) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এমন সংকটময় সময়ে চীন সবসময় সত্যের পক্ষে থাকবে এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তার দেশ অটল সমর্থন দেবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। উত্তেজনা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে সবাইকে। চীন শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।
চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, চলতি মাসের শেষে শতাধিক ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীসহ চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি বলেন, এত বড় একটি বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল এর আগে কখনো বাংলাদেশে আসেনি। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত হবে।
স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রক্রিয়া দেশটির নিজস্ব বিষয়। চীন এ ব্যাপারে কোনো মতামত দিতে চায় না।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক শুধু ৫০ বছরের নয়, হাজার বছরের। চীন বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে সবসময় পাশে থেকেছে।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। চীন কখনো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি এবং সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে।
এই সেমিনারে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে।