প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১১:১৪
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতের পর ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বড় ঘোষণা করেন, যেখানে তিনি জানিয়ে দেন, দুই দেশের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি মার্কিন প্রশাসনের মধ্যস্থতায় হয়েছে, যার ফলে সামরিক সংঘাতের তীব্রতা অনেকটা কমে আসে। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ স্যুজি ওয়াইলস জরুরি ভিত্তিতে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদ্যোগ নেন।
বিশ্বজুড়ে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বস্তির সংকেত হিসেবে দেখা হলেও, ভারতের ভিতরে এর কিছুটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিল। সাবেক সেনাপ্রধান ভেদ প্রকাশ মালিক এবং সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ভারতীয় জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না এবং এটি বিদেশি মধ্যস্থতার প্রতি ভারতের দীর্ঘকালীন অবস্থানের বিরোধিতা করেছে।
এরপর ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলা এবং ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’ অনেক কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছে। যদিও ভারত দাবি করেছে যে, তারা শুধুমাত্র সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, কিন্তু পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের সাধারণ জনগণ এবং শিশুদেরও ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়, এবং প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
চীন এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সামরিক সম্পর্কের দিকে নজর দিলে, এটি স্পষ্ট যে, চীনের সহযোগিতায় পাকিস্তানের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সালের পর থেকে পাকিস্তান চীনের থেকে ৮১ শতাংশ অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। ভারতের সামরিক বাহিনী এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে, বিশেষত যখন চীন ও পাকিস্তান একত্রে কাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সঠিকভাবে প্রস্তুত না হলে, ভবিষ্যতে ভারতের কৌশলগত সীমাবদ্ধতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কিছু ভুলের কারণে চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগজনক।
এখন বিশ্বজুড়ে চোখ রেখেছে দিল্লি এবং ইসলামাবাদের ওপর, যারা নিজেদের মধ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। যেহেতু ভারত ও পাকিস্তানে শতকরা এক-চতুর্থাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত কেবল তাদের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বাঁধা সৃষ্টি করবে। তাই ভারত ও পাকিস্তানের ভবিষ্যত নির্ভর করছে রাজনৈতিক কৌশল এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর।