সরাইলে ওষুধের দাম বেড়ে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:২৫ পূর্বাহ্ন
সরাইলে ওষুধের দাম বেড়ে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে

মৌসুমি জ্বর, সর্দি ও কাশির কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই রোগীরা এখন নিজেদের ইচ্ছেমতো ওষুধ সেবন করছেন। এর ফলে সাধারণ ওষুধের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে, যা সরাইলের বাজারে ওষুধের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। 


সর্বত্র বেড়ে চলা দ্রব্যমূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে সরাইল উপজেলায় বিভিন্ন জীবন বাঁচাতে ব্যবহৃত ওষুধের দামও ইচ্ছামতো বাড়ানো হচ্ছে। চাল, ডাল, মাংস, ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।


উচালিয়াপাড়ার ষাটোর্ধ্ব এক গৃহিণী বলেন, "মাসের শুরুতে প্রবাসী ছেলের টাকা তোলার পর ওষুধ কিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে প্রতি মাসেই দাম বাড়ছে। আগের মতো একই টাকায় আর ওষুধ কিনতে পারি না।" একই কথা বলেছেন অন্য অনেক ক্রেতা। তারা জানান, মাস ছয়েক আগে এক হাজার টাকার ওষুধ কিনতে তাদের এখন ১ হাজার ৫০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে।


বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুধু দাম বাড়ানোর বিষয় নয়, ভেজাল ওষুধের প্রসঙ্গও বেশ উদ্বেগজনক। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা যখন ফার্মেসিতে অভিযান চালায়, তখন দেখা যায় নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের মজুদ। ফার্মেসি কর্মীরা জানাচ্ছেন, "ক্রেতাদের দাম নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। কোম্পানি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে বলে আমরা জানাচ্ছি।"


সরাইল উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, কিছু ওষুধের দাম সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোম্পানির সিদ্ধান্তই মূল কারণ।


এক ক্রেতা ইকরাম জানান, তার মায়ের জন্য নিয়মিত ওষুধ কিনতে গিয়ে তিনি ব্যাপক ব্যয়বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছেন। "বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে খাবার ও ওষুধের বাজেটে কমতি করতে হচ্ছে।"


সরাইলের এ অবস্থা সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 


সরকারি সংস্থাগুলোর উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া, যাতে সাধারণ মানুষ সঠিক ওষুধ পেতে পারেন এবং তাদের পকেটের ওপর বাড়তি চাপ কমানো সম্ভব হয়।