ঢাকায় যানজটের দুর্ভোগ: ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন
ঢাকায় যানজটের দুর্ভোগ: ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে

রাজধানী ঢাকায় সড়ক যোগাযোগে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন সত্ত্বেও যানজটের সমস্যার সমাধান হয়নি। রাজধানীবাসী প্রতিদিন যানজটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, যার ফলে প্রায় ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।


বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উপলক্ষে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সেমিনারে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এ দিন হাতিরঝিলে সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করা হয়, যেখানে ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।


ডিটিসিএ’র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহছানুল হক। তিনি বলেন, "ঢাকায় দেখা যায়, একটি শিশুর জন্যও ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে, যা যানজট বাড়ানোর একটি প্রধান কারণ। গণপরিবহণের সংখ্যা বাড়লেও সঠিক শৃঙ্খলার অভাবে তার সুফল মিলছে না।" তিনি আরও জানান, সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে আলোচনা করে সপ্তাহে একদিন গাড়িমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।


বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "গাড়িভিত্তিক উন্নয়নের দুষ্টচক্রের ফলে সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, যা যানজট ও দূষণ বাড়াচ্ছে।"


তিনি নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়াও, তিনি কার ফ্রি স্কুল জোন গড়ে তোলা, পথচারীবান্ধব রাস্তা নির্মাণ এবং বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের সম্প্রসারণের সুপারিশ করেন।


ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার জানান, ঢাকা শহরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত মোটরযানের মধ্যে গণপরিবহণ মাত্র ১০ শতাংশ, যা ব্যক্তিগত গাড়ির অনুপাতে অপ্রতুল। তিনি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত করে জনবান্ধব নগর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০০১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ৩৩টি দেশে পালিত হয় এবং বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৪,০০০ শহরে এই দিবসটি উদযাপিত হয়।