ইরান দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অত্যাধুনিক গোয়েন্দা জাহাজ উন্মোচন করেছে। এই জাহাজটির নাম "জাগরোস" এবং এটি ইরানের নৌবাহিনীর যুদ্ধ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, জাগরোস জাহাজটি আধুনিক ইলেকট্রনিক সেন্সর, ইন্টারসেপ্টর, সাইবার ও গোয়েন্দা প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত।
নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি জানান, জাগরোস জাহাজটি ইরানের নৌবাহিনীর চোখ হিসেবে কাজ করবে, যা গভীর সমুদ্র এবং মহাসাগরে নজরদারি করবে। এটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইরানের সুরক্ষা শক্তি আরও বৃদ্ধি করবে।
এদিকে, ইরান এখনো তার গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এই মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো নাতাঞ্জ, ফোর্দো, খান্দাবের মতো স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা। মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই মহড়া চলবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তীব্র উত্তেজনার দিকে চলে গিয়েছিল। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসার পর ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
এছাড়া, ২০২০ সালে ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ রেভল্যুশনারি গার্ডস জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়।
এখন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার বিভিন্ন বিকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল পরমাণু বোমা তৈরির প্রচেষ্টা রুখে দেওয়া। তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
এমনকি ইরান সম্প্রতি ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে একমাত্র অ-পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে ইরান এই দক্ষতা অর্জন করেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান দাবি করেছেন, গত এক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের আঞ্চলিক অবস্থান একটুও দুর্বল হয়নি। তিনি পুনরায় বলেন, ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না এবং এ ধরনের অভিযোগগুলো ‘পূর্ব পরিকল্পিত অজুহাত’ হতে পারে।
এদিকে, ইরান তার আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছে, যা আগামীদিনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।