নওগাঁর সাপাহারে মনিরুল ইসলাম নামে এক যুবক তার বাবার জন্য পাত্রী চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে মনিরুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেরিফাই ফেসবুকে বাবার ছবি দিয়ে স্ট্যাটাসটি পোস্ট করেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মুনিরুল উল্লেখ করেন, মাকে হারিয়েছি গত বছর আগে। আমার মা ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। সেই থেকে আমার বাবা একাকীত্ব ভাবে জীবন যাপন করছেন। তিনি হাই প্রেশারের রোগী। বাবার বয়স প্রায় ৪৮ বছর। আমরা বর্তমানে সাপাহার উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকায় বসবাস করি।
আমার বাবা ইসলামপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভী ( শিক্ষক) হিসেবে কর্মরত আছেন। আর হয়তো ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে অবসর গ্রহণ করবেন। এমন অবস্থায় তার সেবা যতœ করার জন্য অবশ্যই একজন কাছের মানুষের দরকার। বাবার একাকিত্ব দূর করতে চাই। সেজন্য আমি আমার বাবার জন্য পাত্রী খুঁজছি। আর্থিক অবস্থা না থাকলেও চলবে। বয়স ৩৮ থেকে ৪০ বছর হলে ভালো হয়। যাতে করে উনার সেবাসহ সাংসারিক কাজ কর্মে সহযোগিতা করতে পারেন।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মা গত (২০২১সাল ) বছর আগে মারা গেছেন। আমার প্রিয় মাকে হারিয়ে বাবা খুব নিঃসঙ্গবোধ করছেন। বাবার জীবন সঙ্গী প্রয়োজন। বাঁকি জীবনটুকু বাবা যেন ভালো থাকে সেটাই চাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুকে যদি আমরা পজেটিভ কিছু তুলে ধরি বা পজেটিভ কিছু পোষ্ট দেই বা লিখি তাহলে এ মাধ্যম থেকে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে পারবো। সেই লক্ষেই এমন পোষ্ট দিয়েছি।
স্থানীয় মাওলানা খালেদ বিন ফিরোজ বলেন, আমাদের সমাজের সাধারণ চিত্র হচ্ছে বিপত্নীক বা স্বামী বা স্ত্রী হারা মানুষদের নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে এবং নিজ সন্তান ও নিজেদের স্বার্থের জন্য তাদের বিবাহকে নেতিবাচকভাবে দেখে এবং সেটার সমালোচনা করে যা আমাদের মুর্খতা এবং বোকামী ছাড়া কিছু না। একজন বিবাহিত মানুষের দীঘর্ জীবন পর যখন তিনি সঙ্গী হারা হয়ে যান তার অবশিষ্ট জীবনের সবটুকু সময় একাকী এবং নিঃসঙ্গ কাটানো কতটা কষ্টের তা আমাদের সমাজের মানুষ বর্তমানে বুঝার চেষ্টা করেনা। সন্তানদের উচিৎ বাবা কিংবা মা বিয়ে করতে চাইলে এ ব্যাপারে তাদের অনাগ্রহ না থাকলে আপত্তি না থাকলে নিজেরা তাদের বিয়ের ব্যপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষেরই জীবন সঙ্গী নিয়ে জীবন ধারনের অধিকার আছে। যেহেতু মনিরুল ইসলামের মা নেই। যার কারনে বাবার জন্য পাত্রী চেয়ে হয়তো ফেসবুকে পোষ্টটি করেছেন তিনি। আর বাবা যেহেতু বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি যার কারনে সন্তান হিসেবে বাবার জন্য পাত্রী খোঁজ করা বা বাবাকে বিয়ে দিয়ে বাবার একাকীত্ব দূর করা সন্তানের দায়িত্বও বটে। কোন ভুল পথে না গিয়ে বাঁকি জীবনটুকু বিয়ে করে জীবন সঙ্গীর সাথে ও পরিবারের সবার সাথে কাঁটুক এটাই প্রত্যাশা করছি। মনিরুল ইসলাম একটি দৈনিক পত্রিকার সাপাহার উপজেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।