সরাইলে মোবাইল গেইমে লিপ্ত উঠতি বয়সীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৪শে মে ২০২২ ০৭:২৩ অপরাহ্ন
সরাইলে মোবাইল গেইমে লিপ্ত  উঠতি বয়সীরা

ঘরের একা রোমে বা বাড়ির পাশে বসে মোবাইল ফোনে গেইম খেলে এমন দৃশ্য গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে উপজেলার সব জায়গা দেখা যায়, অনেক পরিবারের অভিভাবকরা স্কুল মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রদের কে ফোনে  গেইম খেলতে নিষেধ করে বকাঝকা করলে তারা। বাবার উপর অভিমান করে। পরে রাগের মাথায় ঘর থেকে বের হয়ে যায় এমন খবর গণমাধ্যমে প্রতি নিয়ত শুনা যায়। 


এমন ঘটনা অহরহ হচ্ছে প্রায় পরিবারে।  করোনা মহামারির দুই বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে উঠতি বয়সীদের অনলাইন গেইম আসক্তি বেড়েছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।


 অনলাইন গেইমের লিপ্ত বেশী শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটছে। 


স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে না আসক্তরা। সন্তানের ভবিষৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। এ বিষয়ে সরাইল উপজেলার অনেক অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, করোনা  মহামারী শুরুর বছর এলাকার  স্কুল যখন বন্ধ হয়ে গেল, তখনই প্রায় শিক্ষার্থী  ধরল মোবাইলে অনলাইন গেইমের নেশা। পাবজি, ফ্রি ফায়ার, এইসব খেলা রাস্তায় বা মাঠের পাশে বসে খেলতে দেখা যেত।  আমরা ঐ সময় মানা করলে শুনত না। খাওয়া পড়া বাদ দিয়ে খেলত। অনেক বকাঝকা করেও খেলা ছাড়াতে পারিনি। এখন আর সে নিয়ন্ত্রণে নাই। 


আগে একটু আকটু খেলত।বন্ধুদের দেখাদেখি খেলতে শুরু করেছিল, এখন না খেললে ভালো লাগে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন,করোনাকালে অনলাইন ক্লাসের জন্য ছেলেকে অ্যান্ডুয়েড মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিলাম। আর বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েছিলাম। ছেলেটা এখন রাতদিন মোবাইল ছাড়া থাকতে পাড়ে না। এখন আসক্তি এতটাই প্রবল হয়ে উঠেছে যে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।


মাঝে মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ করে। কিছু বললেই মেজাজ চড়া হয়ে যায়। বাসার জিনিসপত্র ভেঙে ফেলে। করোনাকাল স্বাভাবিক হলেও ছেলের আচরণে স্বাভাবিক পরিবর্তন আসেনি। ছেলেকে নিয়ে বিপদে আছি। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা  ডা.মো.নোমান মিয়া বলেন, এজন্য অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। করোনা মহামারিতে মানুষ ঘরবন্দি ছিল। 


এ সময় তারা মানুষের সঙ্গে খুব কম মিশতে পেরেছে। করোনাকালীন সময় ঘরে বসে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাসে করতে গিয়ে মোবাইল ফোন, অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা ল্যাপটপ এর উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এতে তারা অনলাইন নানা গেইমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এইসব মোবাইল ফোনে বেশি ঘাটাঘাটি করলে  তারা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 


এখন যেহেতু মহামারী নেই স্বাভাবিক জীবন-যাপনে মানুষ ফিরে আসছে। শিক্ষার্থীকে বেশি বেশি পাঠ্য বই পড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ দিতে হবে। তিনি এ  সময় আরও বলেন, যারা অভিভাবক রয়েছেন তাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে ১৮বছরের নিচে যারা আছে তাদের কাছে মোবাইল ফোন দিবেন না। 


অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।এদিকে, সরাইল উপজেলার  বিভিন্ন অনুষ্ঠানে  শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হয়।সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।