বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলা মামলার রায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ১৯ বছর আগে রাজধানীর পল্টন ময়দানে এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সোমবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর সালাউদ্দিন হাওলাদার নিশ্চিত করেন। এর আগে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কারাগারে থাকা চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের এজলাসে সকাল সাড়ে ১০টায় তাদেরকে হাজির করা হয়। এ মামলায় মোট ৩৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
গত ১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের এদিন দিন নির্ধারণ করেন আদালত। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে দুর্বৃত্তরা বোমা হামলা করে। এতে পাঁচজন নিহত এবং ২০ জন আহত হন। ওই ঘটনায় সিপিবির তৎকালীন সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের আগস্টে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা হয়।
এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবারও তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। তদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃনাল কান্তি সাহা। পরের বছর ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন (চার্জগঠন) করেন আদালত।
মামলার আসামিরা হলেন- হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, হুজির সদস্য মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মো. মশিউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও নূর ইসলাম। আসামিদের মধ্যে জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আর শেষের সাতজন পলাতক। এ মামলায় দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
ওই সমাবেশে বোমা হামলায় নিহতরা হলেন— খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম, মাদারীপুরের মুক্তার হোসেন ও খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।