প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের অবশিষ্ট জেরা আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর এ জেরা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই জেরা হবে। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন জেরা পরিচালনা করবেন বলে জানা গেছে। এতে মামলার অগ্রগতি নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে আইনি মহল মনে করছে।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন নাহিদ ইসলাম। সেদিন দুপুরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে কিছু সময় জেরা করা হলেও তা শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আজকের জন্য কার্যক্রম মুলতবি করে। ফলে আজকের জেরা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের ধারণা তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া নতুন করে আর তেমন কেউ সাক্ষ্য দেবেন না। এ পর্যন্ত যে সাক্ষ্য হয়েছে তা মামলার গুরুত্বকে আরও জোরদার করেছে।
এর আগে ২ সেপ্টেম্বর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে নিজেকে রাজসাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করেন। ৪ সেপ্টেম্বর তার জেরা সম্পন্ন হয়। তিনি শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে গণহত্যার নির্দেশনায় যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে চলা আন্দোলনের সময় সংগঠিত গণহত্যার বর্ণনা উঠে এসেছে। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। মামলার অগ্রগতি নিয়ে জনমনে আলোচনা চলছে।
ট্রাইব্যুনাল গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশন মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ উপস্থাপন করেছে, যা দেশের বিচারব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগের মোট আয়তন আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে রয়েছে তথ্যসূত্র, জব্দতালিকা, দালিলিক প্রমাণাদি ও শহীদদের তালিকার বিবরণ। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মোট ৮১ জন সাক্ষী তালিকাভুক্ত রয়েছে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা, যা মামলার অগ্রগতি আরও স্পষ্ট করেছে।