রাজধানীর চানখারপুলে সংঘটিত ১৯৭১ সালের বর্বরোচিত গণহত্যার তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এই ঘটনায় মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ অনুসন্ধান, সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথিপত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে তদন্তকারীরা চানখারপুলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।
তাজুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহায়তায় স্থানীয় রাজাকাররা এই অঞ্চলে তল্লাশির নামে গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকে সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত ৮ জনের সবাই যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, লুটপাট ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
প্রসিকিউটর আরও জানান, এখন মামলার আনুষ্ঠানিক প্রসিকিউশন শুরু হবে। নথি ট্রাইব্যুনালে দাখিলের পর বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অপেক্ষা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ৭১ সালের এই হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। এ ধরনের অপরাধের বিচার না হলে জাতি হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা পূর্ণতা পাবে না।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রসিকিউটররা জানান, চানখারপুলের ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত এবং নির্দয়। এলাকাবাসীর মধ্যে এখনো সেই রক্তাক্ত স্মৃতি তাজা রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, যেসব পরিবার এই গণহত্যায় স্বজন হারিয়েছে, তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল বিচার নিশ্চিত করা। তদন্ত শেষ হওয়ায় তারা এখন আশাবাদী, বিচার দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং অপরাধীরা শাস্তি পাবে।