বাংলাদেশের গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের ঘটনায় ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে প্রসিকিউশন। এদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ১৪ দলের বিভিন্ন নেতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। এসব নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং তদন্তে এমন সব তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে যা থেকে স্পষ্ট হয় যে, অভিযুক্তরা গণহত্যা, পরিকল্পিত সহিংসতা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত। তিনি বলেন, এসব প্রমাণ অনুসারে অভিযুক্তরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা পরিচালনা করেছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আদালতে উপস্থাপিত হয় যে, জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানোর জন্য রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহৃত হয়েছিল।
এদিন, ১৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এসব অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক।
তদন্তে উঠে আসা এসব তথ্য-উপাত্তের আলোকে আদালত আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।
এখন পর্যন্ত তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে পাওয়া প্রমাণ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, অভিযুক্তরা একটি সুপরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালিয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সহিংসতার শিকার করেছেন। প্রসিকিউশন এই অপরাধগুলোর জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।