ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে পিরোজপুর-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের নৈকাঠি এলাকায় স্থানীয় গ্রাহকরা একত্রিত হয়ে এ মানববন্ধন আয়োজন করেন। এতে শতাধিক গ্রাহক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন যে, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস গ্রাহকদের মিটার রিডিংয়ে অতিরিক্ত ইউনিট দেখিয়ে বেআইনিভাবে অর্থ আদায় করছে। তাদের মতে, প্রতি মাসে বিলের পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এমনকি বিলের সমন্বয়ও সঠিক সময়ে করা হয় না, ফলে প্রতি ৩-৪ মাস পরপর গ্রাহকরা আগের মাসের তুলনায় দ্বিগুণ বা তার বেশি বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, বাবুল মীর, মো. জাকির হোসেন, বশির আহম্মেদ ও মো. দেলোয়ার হোসেন। তারা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুর্নীতির কারণে সাধারণ গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিলের বোঝা বয়ে চলেছেন। "এক মাসের ৫০০ টাকা বিলের পরের মাসে ১৫০০ টাকায় পৌঁছে যাচ্ছে, যা পুরোপুরি অযৌক্তিক। একই বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরেও এমন বিল কিভাবে আসে, এর কোনো ব্যাখ্যা নেই," বলেও তারা জানান।
তারা আরও অভিযোগ করেন যে, বিদ্যুৎ অফিসে গ্রাহকদের অভিযোগ শোনার বদলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। "গ্রাহকরা যখন বিল নিয়ে সমস্যার কথা বলেন, তখন তাদের বলার হয়, 'পরের মাসে আসেন, ঠিক হয়ে যাবে', অথচ সমস্যা সমাধান হয় না।" এমনকি অনেক সময় বিদ্যুৎ খুঁটি বা মিটার নষ্ট হলে তা পরিবর্তনের জন্য ঘুষ দিতে হয়, এমন অভিযোগও উঠে আসে।
বক্তারা দ্রুত এই দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি এই সমস্যা দ্রুত সমাধান না হয়, তাহলে তারা আরো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
এদিকে, রাজাপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অঃ দাঃ) প্রকৌ. মো. রবিউল হোসেন জানান, মিটার রিডিং অনুযায়ী বিল তৈরি করা হয়। তবে, গরমে অধিক বিদ্যুৎ ব্যবহার হওয়ার কারণে অনেকের বিল বেশি হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।