ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন বিসিএস কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। এতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। রোববার বিভিন্ন দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে কর্মকর্তারা অবস্থান নেন। বিশেষ করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা সকাল থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নেন এবং তাদের দাবির পক্ষে স্লোগান দেন। তাদের সঙ্গে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকেও দেখা গেছে।
এর আগে শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে এক সমাবেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন পরিষদের সমন্বয়ক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও সমাধান না আসে, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। তার দাবি, প্রশাসন ক্যাডারের ২২ কর্মকর্তা সামাজিক মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও জানান, কর্মবিরতির অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে অবস্থান নেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। এ সময় তিনি বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের ১৪ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন এবং এসব সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সভায় আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্ট মহল জনদাবি উপেক্ষা করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ক্ষমতা আরও সুসংহত করার চেষ্টা করছে, যা প্রশাসনিক ফ্যাসিজমকে শক্তিশালী করবে।
মফিজুর রহমান বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে প্রশাসনে বৈষম্য আরও গভীর হবে এবং এতে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনিক কাঠামোতে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা জরুরি।
এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা অংশ নেন এবং তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ আরিফ হোসেন। এছাড়া পরিষদের অন্যান্য সমন্বয়ক এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মবিরতির ফলে বিভিন্ন সরকারি অফিসে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ জনগণ অফিসে এসে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, এটি তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি, যা পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।