বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ার কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও কমিয়ে দিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে আদানি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ৪০ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছে।
এপ্রসঙ্গে জানা গেছে, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে, যা ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত। এই প্ল্যান্টের দুটি ইউনিট থেকে উৎপাদিত ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মূলত বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। তবে গত ১ নভেম্বর, বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ৭০০-৭৫০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়। এরপর গত ৭ নভেম্বর, বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ আরও কমিয়ে ৫২০ মেগাওয়াটে নামানো হয়েছে।
আদানি পাওয়ার এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। গত বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কয়লার দাম নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, যার কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) দাম পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে পরে, আদানি দাম কমাতে রাজি হয়। কিন্তু চলতি বছর আবারো বাড়তি দাম দাবি করে আদানি, যা পিডিবি গ্রহণ করতে পারছে না।
এদিকে, বকেয়া বিলের পরিমাণ এখন ৮৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা)। এই বকেয়া পরিশোধে চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে আদানি, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বিল পরিশোধ না হলে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তবে, পরবর্তীতে আদানি ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ায়।
বিদ্যুৎ সরবরাহে এই হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সরকার বলেছে, বকেয়া বিল ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হচ্ছে এবং যদি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “আমরা কোনও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি করতে দেব না।”
তবে, পিডিবি ইতোমধ্যে আদানির জন্য ১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার (২ হাজার কোটি টাকার বেশি) পরিশোধের জন্য একটি ঋণপত্র খুলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।