ইতালিতে মৃত্যুর সংখ্যা কমার পরদিন আবার বেড়ে গেল। এতে ইতালিবাসীর মধ্যে আবার হতাশা নেমে এসেছে। সোমবার (১৩ এপ্রিল) মৃতের সংখ্যা বিশ হাজার ছাড়িয়েছে, এদিন মোট মৃত্যুবরণ করেছে ৫৬৬ জন। রবিবার এ সংখ্যা ছিল ৪৩১ জন। শনিবার ছিল ৬১৯ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ৪৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিন নতুন আক্রান্ত তিন হাজার ১৫৩ জন।
দেশটিতে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। গুরুতর অসুস্থ রোগীরর সংখ্যা তিন হাজার ২৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১২২৪ জন। চিকিৎসাধীন এক লক্ষ ৩ হাজার ৬১৬ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৫৯ হাজার ৫১৬ জন বলে জানিয়েছেন নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি।তিনি বলেন, জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩৫ হাজার ৪৩৫ জন।
ইতালির ২১ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত (মিলান, বেরগামো, ব্রেসিয়া, ক্রেমনাসহ) ১১টি প্রদেশ। আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ২৮০ জন, যা গতকালের চেয়ে ১৭০ জন বেশি। গতকাল রবিবার এ সংখ্যা ছিল ১১০ জন। শুধু এ অঞ্চলেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দশ হাজার ৯০১ জনে দাঁড়িয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ৩১৪ জন। আজ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২৬২ জন। আজ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩১২ জন। মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৭ হাজার ৪৭৮ জন।এদিকে স্টার সানডে উপলক্ষে জনসাধারণের অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা রোধ করতে সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করে। রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে।
দেশজুড়ে ‘জরুরি নয়’ এমন সব ধরনের ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বাড়ির বাইরে সবধরনের খেলাধুলা ও ব্যায়াম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুপার মার্কেট, ফার্মেসি, পোস্ট অফিস ও ব্যাংক এবং গণপরিবহন এখন পর্যন্ত সচল রাখা হয়।এদিকে লকডাউনের মেয়াদ তৃতীয় দফায় বাড়িয়ে ৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই সাথে ১৪ এপ্রিল থেকে বইয়ের দোকান, শিশুসামগ্রী সরবরাহকারী, কাঠ কোম্পানিগুলোর মত পণ্যের দোকান খুলে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে।
এদিকে লোম্বারদিয়ার প্রসিডেন্ট আত্তিলিয়ো ফোনতানা বলেন, নতুন আইন লোম্বারদিয়ার জন্য কার্যকর হবে না। বইয়ের দোকান, শিশুসামগ্রী সরবরাহকারী, কাঠ কোম্পানিগুলোর মত পণ্যের দোকান এ অঞ্চলে বন্ধ থাকবে।এদিকে লোম্বারদিয়ার মত একই ঘোষণা দিয়েছেন পিয়েমোন্তের প্রেসিডেন্ট জাইয়া।এদিকে প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের এই দুর্দিনে প্রায় আট হাজার অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার, নার্স ও অ্যাম্বুলেন্স কর্মী স্বাস্থ্যসেবা দিতে করোনা আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। শনিবার তিউনিশিয়ার একটি মেডিকেল টিম চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে ইতালিতে এসেছেন। এছাড়াও করোনায় আক্রান্তদের সহযোগিতায় কাতার, আলবেনিয়া, চীন, কিউবা এবং রাশিয়া থেকে আগত মেডিকেল টিম ইতালির বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রান্তদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।