করোনাভাইরাস: চীনে গত ২৪ ঘন্টায় কেউ মারা যায়নি
করোনা আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। উৎপত্তিস্থল চীনে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণা করেছে করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৮১৯ জনসহ মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৮ জনের। এর মধ্যে উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৭। চীনের বাইরে মারা গেছে ৪ হাজার ৭৪৩ জন।
বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯ জন। এরমধ্যে ৮২ হাজার ৭৭৯ জন সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৯৪। দেশটিতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৯ হাজার ৬১৪ জন। গত কয়েক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে তারা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে কেউ মারা যাননি, আক্রান্তের সংখ্যাও খুবই সামান্য।
তবে বিপরীত চিত্র ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে। বর্তমানে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউরোপের দেশ ইতালি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪৫ জন, নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। সেখানে এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ২ হাজার ৫০৩ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৫০৬ জন।
ইতালির পর ইউরোপের মধ্যে স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্সের অবস্থাও ভয়াবহ। স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৯১ জন, নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৮৪ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮২৬ জন, মৃত্যু ৫৩৩ জনের।
জার্মানিতে নতুন নয়জনসহ মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ জন। একদিনেই দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ৯৫ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ হাজার ৩৬৭ জন। ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৭ জন, আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ১৭৫ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৩০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রেও দ্রুত বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন আরও ১৭ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট মৃত্যুর ঘটনা ১০৩টি। এদিন দেশটিতে নতুন করে আরও ১ হাজার ৬৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৮ জন।
শুরুর দিকে আশঙ্কাজনক হারে বাড়লেও গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ জন, মারা গেছেন ছয়জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩২০ জন, মৃত্যু ৮১ জনের।
এ ভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়সুস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরো বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ১৬৫ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। সূত্র: ওয়ার্ল্ডওমিটার
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।