প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪২
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েল সরকার ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। সোমবার এই বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারাগার দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রথম ব্যাচের বন্দিরা ছিলেন পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার উপকণ্ঠে অবস্থিত ইসরায়েলি কারাগার ‘ওফের’-এ। প্রায় দুই হাজার বন্দিকে একযোগে মুক্তি দিয়ে রামাল্লার পশ্চিমাংশের বেইতুনিয়া শহরে স্থানান্তর করা হয়।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস জানায়, সোমবার দুপুরে কয়েকটি বাসে করে এই বন্দিরা ওফের কারাগার থেকে রওনা হন। তাদের পরিবহনের দায়িত্ব নেয় আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইসিআরসি)।
এদিকে একই দিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে এসে পৌঁছেছে দ্বিতীয় ব্যাচের ১ হাজার ৭১৮ ফিলিস্তিনি বন্দি। তারা এতদিন ছিলেন দক্ষিণ ইসরায়েলের নাগেভ কারাগারে। নাগেভের বন্দিদের মধ্য থেকে ২৫০ জন ছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত।
ইসরায়েলি কারা দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর যাদের আটক করা হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকেই এদের মুক্তি দেওয়া হয়। গাজায় পৌঁছানোর পর সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা পরীক্ষা করেছে খান ইউনিসের নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্স।
বন্দিদের মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া ও গাজার খান ইউনিস শহরে জড়ো হন শত শত ফিলিস্তিনি। স্বজনদের আলিঙ্গনে ফিরে পাওয়া বন্দিদের চোখেমুখে ছিল স্বস্তি ও কান্নার মিশ্র আবেগ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলে আসছে। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হয়। পরদিন ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় অঞ্চলটি।
দুই বছরের এই সংঘাতে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার শুরু হয় সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি। যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে হামাস অবশিষ্ট ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়, যার বিনিময়েই ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দি।
ইসরায়েল জানিয়েছে, এই মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কেউ নেই। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, শুধুমাত্র যাবজ্জীবন বা স্বল্পমেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদেরই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।